পৃথিবী আগের তুলনায় দ্রুত গতিতে ঘুরছে, যার ফলে আমাদের দিনের দৈর্ঘ্য সামান্য কমে আসছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই প্রবণতা ২০২০ সাল থেকে লক্ষণীয় এবং এই গতি বৃদ্ধির কারণে ২০২৯ সালের মধ্যে ঘড়ি থেকে এক সেকেন্ড বাদ দিতে হতে পারে, যা ইতিহাসে প্রথমবার হবে।
ঘূর্ণনের পরিবর্তন কেন হচ্ছে?
পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতিতে পরিবর্তন নতুন নয়। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই গতি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ডাইনোসরদের সময়ে দিন ছিল ২৩ ঘণ্টার। তবে বর্তমান গতি বৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রের জোয়ার, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ, ভূমিকম্প এবং ভূপৃষ্ঠের নিচে পরিবর্তনের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা পৃথিবীর ঘূর্ণনকে প্রভাবিত করে।
ওয়াশিংটন ডিসি-তে অবস্থিত আন্তর্জাতিক পৃথিবী ঘূর্ণন এবং রেফারেন্স সিস্টেম পরিষেবা (IERS) জানিয়েছে যে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঘূর্ণনের গতি কমার সাধারণ প্রবণতা থাকলেও, ২০২০ সাল থেকে এটি দ্রুত বাড়ছে। এই বৃদ্ধি এতটাই ধারাবাহিক যে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ঘড়ির সঙ্গে পৃথিবীর ঘূর্ণনের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে ২০২৯ সালে একটি লিপ সেকেন্ড বাদ দিতে হতে পারে।
দিনের দৈর্ঘ্য হ্রাস
timeanddate.com-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রবণতা সম্ভবত ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ওই বছরের সবচেয়ে ছোট দিনগুলি ছিল ৯ জুলাই, ২২ জুলাই এবং ৫ আগস্ট। ৫ আগস্ট পৃথিবীর ঘূর্ণন স্বাভাবিক ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১.৫১ মিলিসেকেন্ড কম হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, যদি এই ধরণ অব্যাহত থাকে, তবে একটি পৃথিবীর দিন ২৫ ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে—তবে তা ঘটতে প্রায় ২০ কোটি বছর সময় লাগবে।