প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতকে স্বনির্ভর করে তুলতে এক যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করল ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF)। বিদেশের ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে আকাশপথের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবার আইআইটি-মাদ্রাজের (IIT-Madras) সঙ্গে হাত মেলাল বায়ুসেনার ‘সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা—সবকিছুকেই ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের আওতায় আনতে দুই সংস্থার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
কেন এই প্রযুক্তি অত্যন্ত স্পর্শকাতর? আধুনিক যুদ্ধের ময়দানে শুধু অস্ত্র নয়, তথ্যের আদান-প্রদান বা ‘ডিজিটাল কমিউনিকেশন’ জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শত্রুপক্ষ যাতে বায়ুসেনার গোপনীয় তথ্যে আড়ি পাততে না পারে, তার জন্য প্রয়োজন অত্যন্ত শক্তিশালী এনক্রিপশন ও বিশেষ অ্যালগরিদম। আইআইটি-মাদ্রাজের উচ্চতর গবেষণা এবং বায়ুসেনার অভিজ্ঞতা মিলে এখন এমন এক দেশীয় সফটওয়্যার কাঠামো তৈরি করবে, যা শত্রুর হ্যাকার বা রাডার ব্যবস্থাকে অনায়াসেই ধোঁকা দিতে সক্ষম হবে।
নেপথ্যের কারিগর: এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের এয়ার ভাইস মার্শাল আর গুরুহরি। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আইআইটি-মাদ্রাজের ডিরেক্টর অধ্যাপক ভি কামাকোটি এবং প্রবর্তক টেকনোলজিস ফাউন্ডেশনের সিইও ডঃ এম জে শঙ্কর রমন।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগের ফলে বিদেশি প্রযুক্তির ব্ল্যাক-বক্স ব্যবহারের ঝুঁকি কমবে। নিজস্ব ‘ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেস’ তৈরির পথে এই মেলবন্ধন ভারতের আকাশযুদ্ধের নিরাপত্তাকে আরও দুর্ভেদ্য করে তুলবে। বিশ্বজুড়ে চলা ডিজিটাল যুদ্ধের আবহে ভারতের এই দেশীয় ‘সুরক্ষা কবচ’ নিঃসন্দেহে এক বড় মাইলফলক।