ফ্রান্সজুড়ে পুরনো সরকারের বিতর্কিত বাজেট প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভের আবহ। দেশের প্রায় ২০০টিরও বেশি শহরে বৃহস্পতিবার হাজার হাজার শ্রমিক, অবসরপ্রাপ্ত এবং ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে অংশ নেন। সরকার এক দিকে খরচ কমাতে সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পে কাটছাঁট করার পরিকল্পনা করছে, কিন্তু অন্যদিকে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের থেকে অতিরিক্ত কর আদায়ের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না—এতেই ফরাসি জনতার মধ্যে অসন্তোষ চরমে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ধর্মঘট ও আন্দোলনের মাত্রা এতটাই ছিল যে, প্যারিসের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র আইফেল টাওয়ারও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়। নিরাপত্তার কারণে পর্যটকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। প্যারিসের প্লেস ডি’ইতালি থেকে বিক্ষোভকারীরা একটি বিশাল মিছিল বের করেন।
বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন এই দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেয়। তাদের মূল দাবি, সদ্য গঠিত নতুন সরকার যেন আগের প্রধানমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনাটি সম্পূর্ণ বাতিল করে দেয়। ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, ওই প্রস্তাবনায় সমাজকল্যাণ কর্মসূচিগুলির উপর রাশ টানার সুপারিশ করা হয়েছিল, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতাকে আরও কমিয়ে দেবে। আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির স্পষ্ট দাবি—সামাজিক প্রকল্পগুলির তহবিল বজায় রাখার জন্য ধনী ব্যক্তিদের উপর আরও বেশি করে কর বসাতে হবে।
দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি এখনও তাঁর মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেননি বা বাজেটের বিস্তারিত বিবরণ দেননি। তবে শীঘ্রই সংসদীয় আলোচনা শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে আগের সরকারের বাজেট প্রস্তাবনা বাতিল করার বিষয়ে নতুন সরকারের ওপর তীব্র জন-চাপ তৈরি হলো, যা বাজেট বিতর্ককে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।