আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে পাকিস্তান বিমান হামলা চালানোর দুই দিন পর পাল্টা জবাবে শনিবার রাতে আফগান বাহিনী ডুরান্ড লাইনে পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তান রবিবার সন্ধ্যায় দাবি করেছে, আফগান তালিবানের সঙ্গে শনিবার রাতে হওয়া সীমান্ত সংঘর্ষে তাদের ২৩ জন সেনা নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, আফগান পক্ষ দাবি করেছিল যে, তাদের বিমান হামলায় ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে এবং তারা সীমান্তে ২৫টি পাকিস্তানি চৌকি দখল করেছে।
সংঘর্ষের বিবরণ ও পাল্টা দাবি:
শনিবার রাতে ডুরান্ড লাইনের কুরাম জেলার গাভি অঞ্চলে পাকিস্তান এবং আফগান সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান সীমান্ত বরাবর উভয়পক্ষের মধ্যে গুলি ও সংঘর্ষ হয়।
পাকিস্তানের দাবি: পাক সেনা জানিয়েছে, আফগান তালিবান বিনা প্ররোচনায় এই হামলা চালিয়েছে। তবে তারা দাবি করেছে, পালটা জবাবে ২০০-এরও বেশি তালিবান যোদ্ধা এবং জঙ্গি নিহত হয়েছে। পাক সেনা আরও দাবি করেছে যে, তারা সাময়িকভাবে ২১টি শত্রু ঘাঁটি দখল করেছে। তারা বেসামরিকদের ওপর হামলা না করে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে।
আফগানিস্তানের দাবি: আফগান পক্ষ ৫৮ পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু এবং ২৫টি পাকিস্তানি চৌকি দখলের দাবি করে।
সীমান্ত বন্ধ ও তালিবানের কড়া হুঁশিয়ারি:
সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর পাকিস্তান সরকার খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে আফগানিস্তানের সঙ্গে লাগোয়া তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ হামলার নিন্দা করেছেন এবং কঠোর জবাব দেওয়ার সংকল্প নিয়েছেন। অন্যদিকে, তালিবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, পাকিস্তান যদি আবারও আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করার চেষ্টা করে, তবে আফগান সশস্ত্র বাহিনী দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং কড়া প্রতিক্রিয়া দেবে।
তালিবানের মারাত্মক অভিযোগ:
আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ কাবুলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান তার মাটিতে আইএসআইএস (ISIS)-কে আশ্রয় দিচ্ছে, কিন্তু আফগানিস্তান তা করতে পারে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের তার আকাশ এবং স্থল সীমান্ত রক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।