আইআইটি খড়গপুরে ফের রহস্যমৃত্যু, বর্ষীয়ান ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, প্রশ্নবিদ্ধ কর্তৃপক্ষ

দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়গপুরে ফের এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার প্রতিষ্ঠানের রাজেন্দ্র প্রসাদ হলের একটি কক্ষ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ঋতম মণ্ডল (২৫)-এর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চলতি বছরে আইআইটি খড়গপুরে এটি চতুর্থ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা, যা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার কাঠামো নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঋতমের বন্ধুরা তাঁকে ডাকতে গিয়ে বারবার সাড়া না পাওয়ায় আইআইটি কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। এরপর কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে খড়গপুর টাউন থানার অধীন হিজলি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ দরজা ভেঙে ২০৩ নম্বর কক্ষ থেকে ঋতমের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে দ্রুত বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ঋতমের দেহ সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল। ঋতম মণ্ডলের বাড়ি কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায়। তাঁর বাবা উত্তম কুমার মণ্ডলকে এই মর্মান্তিক খবর জানানো হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এটি আত্মহত্যা নাকি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একই বছরে চারজন ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে। বারবার এমন ঘটনা কেন ঘটছে? শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা কি আদৌ রয়েছে? কর্তৃপক্ষ কি এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলি এখন শিক্ষা মহলে জোরদার আলোচনায় উঠে আসছে। প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরাও এই লাগাতার মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং আইআইটি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এই বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy