অসমে মধ্যযুগীয় বর্বরতা! ডাইনি সন্দেহে দম্পতিকে কুপিয়ে খুন করে পুড়িয়ে মারল গ্রামবাসীরা

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও কুসংস্কারের থাবায় প্রাণ হারালেন এক দম্পতি। অসমে ডাইনি সন্দেহে (Witchcraft) নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক ভয়াবহ ছবি ফের সামনে এল। অসমের কার্বি আংলং জেলার হাওরাঘাট এলাকার বেলোগুড়ি মুন্ডা গ্রামে মঙ্গলবার এক দম্পতিকে কুপিয়ে খুন করে তাঁদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

নিহতদের নাম গার্দি বিরোয়া (৪৩) ও মীরা বিরোয়া (৩৩)। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে উন্মত্ত জনতা তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। প্রথমে তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় এবং পরে ঘর বাইরে থেকে বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ওই এলাকায় কুসংস্কারের শিকড় অত্যন্ত গভীরে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কোনো একটি রোগের প্রকোপ বা অমঙ্গলের দায় ওই দম্পতির ওপর চাপিয়ে তাঁদের ‘ডাইনি’ অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। অসমে ‘উইচ হান্টিং (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১৫’ থাকা সত্ত্বেও কেন এই ধরণের নৃশংসতা কমছে না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। তথ্য বলছে, গত এক দশকে অসমে এই কুসংস্কারের বলি হয়েছেন ১০০-রও বেশি মানুষ। আইন ও সচেতনার অভাব—দুইয়ের ফলেই এমন আদিম বর্বরতা বারবার ফিরে আসছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy