ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ প্রক্রিয়া (SIR) ঘোষণার পরই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কার্যত ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শুধু কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন না, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (CEC) জ্ঞানেশ কুমারকে সরাসরি নাম ধরে ভবিষ্যতের জন্য ‘ওয়ার্নিং’ দিয়ে বসলেন।
সোমবার তৃণমূল ভবনে বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অভিষেক। তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল দুটি— SIR-এর মাধ্যমে বিজেপি বাংলায় ‘অপমান ও বিভাজন’ তৈরি করতে চাইছে এবং নির্বাচন কমিশন তাদের ‘ক্যাডার’ হিসাবে কাজ করছে।
‘খুঁড়ে নিয়ে আসব’, ‘ঘেরাও করবে ১ লক্ষ লোক’
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জ্ঞানেশ কুমারকে নিশানা করে বলেন:
“আমি সাংসদ হিসাবে এদের ওয়ার্নিং দেব, আজ নয় কাল সরকার বদলাবে। জ্ঞানেশবাবু দেশ ছেড়ে পালাবেন না। বিজেপি থাকবে না, দেশের সংবিধান থাকবে। অমিত শাহ থাকবে না। তখন যেখানে থাকবেন খুঁড়ে নিয়ে আসব। জবাবদিহি মানুষের কাছে দিতে হবে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, একটিও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে বাংলার “এক লক্ষ লোক গিয়ে কমিশনের অফিস ঘেরাও করবে। অমিত শাহের দিল্লিপুলিশ আটকে দেখাক।”
কেন অসমে SIR হচ্ছে না?
অভিষেক তাঁর যুক্তির সমর্থনে নির্বাচন কমিশনের ‘পক্ষপাতিত্ব’-এর অভিযোগ তোলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, কেন SIR প্রক্রিয়া বাংলাতে শুরু হলেও বিজেপি শাসিত অসমে হচ্ছে না?
তাঁর যুক্তি, অসমেও বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। তাহলে শুধু বাংলাতেই কেন SIR?
তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “যে পাঁচটা রাজ্যে ভোট আছে, খুব কৌশলের সঙ্গে অসমকে বাদ দিয়েছে। কারণ বিজেপি ক্ষমতায় আছে। তাহলে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে SIR হবে না।”
‘বাংলাকে অপমান, বাঙালিকে বাংলাদেশি তকমা’
অভিষেক বলেন, এসআইআর-এর পিছনে কমিশনের মূল উদ্দেশ্য হল— “বাংলাকে অপমান, বাংলা ভাষাকে বিদ্রুপ, বাঙালিকে বাংলাদেশি বেল দাগানো।”
তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, SIR হওয়ার পরও তৃণমূলের যা ভোটের আসন ছিল ২১-এ, তা একটা হলেও বাড়বে। “বিজেপিকে পঞ্চাশে নামাব। ক্ষমতা থাকলে চ্যালেঞ্জ নিন।”
শেষে তিনি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে বাংলায় অতিথি হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ইতিহাস পড়তে বলেছেন এবং মনে করিয়ে দিয়েছেন, “বাংলা না থাকলে যে ভাষায় কথা বলছেন বলতে পারতেন না।”