প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি তাঁর লিঙ্কডইন পোস্টে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে অনুষ্ঠিত ‘সাউথ ইন্ডিয়া ন্যাচারাল ফার্মিং সামিট ২০২৫’ থেকে উদ্ভূত কৃষি ক্ষেত্রে এক বিরাট পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেছেন। কোয়েম্বাটোর, যা ভারতের এমএসএমই (MSME)-এর মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত, সেখানে এই সামিট ভারতের কৃষকদের আত্মবিশ্বাস এবং কল্পনার এক নতুন দিক নির্দেশ করে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
🧑🔬 কারা ফিরছেন নিজের শিকড়ে?
প্রধানমন্ত্রীর মতে, কৃষি এখন আর কেবল গ্রামীণ ভারতের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কোনও পেশা নয়, বরং এটি দিনে দিনে ‘আগামীর পেশা’ হয়ে উঠছে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল:
শিক্ষিতদের অংশগ্রহণ: বিজ্ঞানী, কৃষক সংগঠনের নেতা, ফার্স্ট জেনারেশন গ্র্যাজুয়েট এবং কর্পোরেটের দারুণ স্যালারির চাকরি ছেড়ে আসা মানুষেরা অর্গানিক ফার্মিংয়ে ঝুঁকছেন।
উদ্ভাবন: এঁদের মধ্যে অনেকে ১০ একর জমিতে কলা, নারকেল, পেঁপে চাষ করছেন বা স্থানীয় ধান সংরক্ষণ করে প্রোটিন বার, হেলথ মিক্স এবং চকোলেটের মতো পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যপণ্য তৈরি করছেন।
🌱 অর্গানিক ফার্মিংয়ের মূল মন্ত্র ও উপকারিতা
অর্গানিক ফার্মিং মূলত ভারতের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও আধুনিক বাস্তুতন্ত্রের নীতির উপর নির্ভরশীল।
উপাদান: এই পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার হয় না। এর পরিবর্তে, পঞ্চগব্য, জীবামৃত, বীজামৃত এবং মালচিংয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী কৌশলগুলি ব্যবহার করা হয়।
সুবিধা: এটি মাটির স্বাস্থ্য বাড়াতে, আগাছা দমন করতে, মাটির আর্দ্রতা সংরক্ষণ করতে এবং চাষের খরচ কমাতে সাহায্য করে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
🔬 বিজ্ঞান ও উদ্যোগের মেলবন্ধন
এই সামিটে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উদ্যোগে জোর দেওয়া হয়েছে:
একজন বায়োটেকনোলজি বিশেষজ্ঞ শৈবালভিত্তিক জৈব সার (Seaweed-based Biofertilizer) তৈরি করাচ্ছেন, যা ৬০০ জন মৎস্যজীবীকে কর্মসংস্থান দিয়েছে।
আরেকজন ১৫ একর জমিতে অর্গানিক ফার্ম চালাচ্ছেন এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩০ টন সবজি সরবরাহ করছেন।
📢 প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ:
কেন্দ্রীয় সরকার ‘ন্যাশনাল মিশন অন ন্যাচারাল ফার্মিং’-এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কৃষককে এই পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের ‘এক একর, এক ঋতু’ (One Acre, One Season) দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে ছোট প্লট থেকেই আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।