আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শেষ করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করল ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI)। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭.৪২ কোটি, যা এই বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত থাকা ৭.৮৯ কোটি ভোটারের তুলনায় ৬৫ লক্ষ কম।
যদিও নির্বাচন কমিশন এই বিশাল কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিহারের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছে, তবে এই SIR প্রক্রিয়া যে পদ্ধতিতে করা হয়েছে, তা নিয়ে বিরোধী দলগুলো তীব্র বিরোধিতা করেছে।
বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম বাদ
নির্বাচন কমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ১ আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত খসড়া তালিকায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭.২৪ কোটি। চূড়ান্ত তালিকা তৈরির সময়:
বাদ: খসড়া তালিকা থেকে ৩.৬৬ লক্ষ অযোগ্য ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
যোগ: ২১.৫৩ লক্ষ যোগ্য ভোটারের নাম খসড়া তালিকায় (ফর্ম ৬) নতুন করে যোগ করা হয়েছে।
এর ফলে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭.৪২ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। ইসিআই জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া সংবিধানের ৩২৬ নম্বর ধারা এবং কমিশনের মূলমন্ত্র অর্থাৎ ‘কোনও যোগ্য ভোটার যেন বাদ না যায় এবং কোনও অযোগ্য ব্যক্তির নাম যেন তালিকায় না ঢোকে’— তা মেনেই করা হয়েছে।
বিতর্ক গড়াল সুপ্রিম কোর্টে
ভোটার তালিকা সংশোধনের এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে বিরোধীরা আপত্তি জানালেও নির্বাচন প্যানেল জানিয়েছে, তারা নিয়মিত বৈঠক করে রাজনৈতিক দলগুলোকে SIR প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছে এবং পুরো সময় অবহিত রেখেছে।
তবে, এই SIR-এর বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি করছে সুপ্রিম কোর্ট, এবং চূড়ান্ত যুক্তিতর্কের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে। শীর্ষ আদালত কড়া ভাষায় জানিয়েছে, তারা ধরে নিচ্ছে নির্বাচন প্যানেল আইন মেনেই কাজ করছে, তবে কোনও বেআইনি কাজ প্রমাণিত হলে এই প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে।
ইসিআই-এর অভিনন্দন ও আপিলের সুযোগ
নির্বাচন কমিশন বিহারের জনগণ, নির্বাচনী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দল এবং লক্ষ লক্ষ বুথ লেভেল অফিসার (BLO) সহ প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA)-এর পূর্ণ অংশগ্রহণে এই কাজ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকার ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল কপি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে। কমিশন আরও জানিয়েছে, যদি কোনও যোগ্য ব্যক্তি এখনও ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চান, তবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের দশ দিন আগে পর্যন্ত আবেদন জমা করতে পারবেন।
এছাড়াও, তালিকায় কোনো এন্ট্রি নিয়ে ERO-এর সিদ্ধান্তে কেউ সন্তুষ্ট না হলে, তিনি RP আইন, ১৯৫০-এর ২৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পরবর্তীতে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে আপিল করতে পারবেন।