শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর বিলাসবহুল বাসস্থান ‘অ্যান্টিলিয়া’ নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি জটিলতার অবসান ঘটল। বম্বে হাইকোর্ট গত ২৮ জুলাই একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিয়েছে, যার ফলে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের এই বাসভবনটি অম্বানী পরিবারের হাতেই সুরক্ষিত রইল। এই রায়ে অম্বানী পরিবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।
২০০৩ সালে মুকেশ অম্বানী মুম্বইয়ের অলমাউন্ট রোডের উপর অবস্থিত এই জমিটি কিনেছিলেন, যেখানে পরবর্তীতে ‘অ্যান্টিলিয়া’ নির্মিত হয়। তবে জমি কেনার পরপরই বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, এই জমি বিক্রি বেআইনি, কারণ এটি ওয়াকফ সম্পত্তি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনি লড়াই শুরু হয় এবং জমি বিক্রিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়।
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি অলোক আরাধে এবং বিচারপতি সন্দীপ ভি মারনের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৮ জুলাই ওই জনস্বার্থ মামলাটি খারিজ করে দেন। আদালত তার রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, যে জমি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, তার চরিত্র আগেই যাচাই করা হয়েছে এবং তাই এই বিষয়ে আর কোনও হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।
অম্বানী পরিবারের এই জমি নিয়ে বিতর্ক ২০০৭ সাল থেকে চলে আসছিল। আব্দুল মতিন নামে এক ব্যক্তি প্রথম এই জমি বিক্রি বাতিলের দাবি জানান, তার যুক্তি ছিল যে এটি মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি। ৪,৫৩২.৩৯ বর্গমিটারের এই জমিটি নিয়ে মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ডের দাবি সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ও রয়েছে।
অম্বানীদের আইনজীবী পক্ষ আদালতে যুক্তি দিয়েছিল যে, ওই জমিটি খোজা সম্প্রদায়ের একটি অনাথ আশ্রমের ছিল, যা বম্বে পাবলিক ট্রাস্ট অ্যাক্টের অধীনে নিবন্ধিত ছিল। পরে এই জমি ‘অ্যান্টিলিয়া কমার্শিয়াল’ ক্রয় করে। জমি হস্তান্তরের আগে চ্যারিটি কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট জমির সঙ্গে যুক্ত সকলের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ওয়াকফ বোর্ড এই জমিকে তাদের সম্পত্তি বলে দাবি করে, যদিও এটি কখনোই ওয়াকফের নামে নিবন্ধিত ছিল না। আদালতের এই রায়ের ফলে ‘অ্যান্টিলিয়া’কে ঘিরে চলা দীর্ঘদিনের আইনি অনিশ্চয়তার অবসান ঘটল।