তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনওরকম সম্মানহানিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মানহানির মামলার ভিত্তিতে আদালতের এই নির্দেশ।
সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন) ৮ নম্বর আদালতের বিচারক সোমনাথ কুণ্ডু নির্দেশ দিয়েছেন যে, আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী কোনও মুদ্রিত, ইলেকট্রনিক বা সামাজিক মাধ্যমে মৌখিক বা লিখিতভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানহানি হয়, এমন কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বাক স্বাধীনতা মানে এই নয় যে তা ব্যবহার করে কাউকে অসম্মান করা যাবে। কোনও জনপ্রতিনিধির সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা হলে তা বাক স্বাধীনতার পরিসরের বাইরে পড়ে।
অভিযোগ, ২৬ জুন বিজেপির রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু অধিকারী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচনী জালিয়াতি, সরকারি অর্থের অপব্যবহার, ভোট পরবর্তী হিংসা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। এমনকি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে তাঁকে ‘প্রতারক’ বলেও উল্লেখ করা হয়।
এই সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিও বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে। শুভেন্দু অধিকারীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও এটি প্রচারিত হয়, যেখানে তাঁর লক্ষাধিক অনুগামী রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি দাবি করেন যে, বক্তব্যগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা এবং শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষতিসাধনের জন্য তৈরি। মানহানির অভিযোগে তিনি ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন।
আদালতের এই নির্দেশ রাজনৈতিক মহলে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এমন নিষেধাজ্ঞা বিরল এবং তা রাজনৈতিক শিবিরে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ১৯ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এখন দেখার, এই নির্দেশের পর রাজনৈতিক বিতর্কের গতিপ্রকৃতি কেমন হয়।