কোচবিহারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনার পর রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গাড়ি ভাঙচুর এবং হামলার অভিযোগের পর শুভেন্দু সরাসরি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন। বুধবার তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন, দাবি করেছেন যে ‘অভয়া কাণ্ড’-এর ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি ঝাড়গ্রামে পালিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অভয়া কাণ্ড’-এর ব্যর্থতা লুকানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “অভয়া কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতা এতটাই প্রকট যে, অভয়ার বাবা-মা এখন ভয়ে শহর ছেড়ে ঝাড়গ্রামে পালিয়েছেন।” শুভেন্দুর মতে, “ডাক্তার বোনের উপর শারীরিক অত্যাচার এবং তাঁর মৃত্যুর জন্য প্রধান দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” তিনি আরও দাবি করেন, অভয়ার বাবা-মা যখন নবান্নের কাছে বিচার চাইতে গিয়েছিলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক কর্মসূচির অজুহাতে ঝাড়গ্রামে পালিয়ে যান। শুভেন্দু ইঙ্গিত দেন যে, মুখ্যমন্ত্রী হাওড়ার ‘নীল বাড়ির ১৪ তলার গদি’ হারানোর ভয়ে পুলিশকে রাস্তায় নামিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগের পর তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তৃণমূল নেতারা তাঁর এই মন্তব্যকে ‘নাটকের রাজনীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, শুভেন্দু ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে রাজ্যের শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের এক মুখপাত্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক কাজে গেছেন, এটাকে পালানো বলা হাস্যকর।” তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ‘শান্তি বিনষ্ট’ করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে, কোচবিহারে শুভেন্দুর কনভয়ে হামলার ঘটনায় বিজেপি কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদে নেমেছেন। হাওড়া গ্রামীণ জেলায় বিজেপি কর্মীরা পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। বিজেপির পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দায়ী করা হয়েছে। তারা দাবি করছে, তৃণমূল সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
বর্তমানে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল এই দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত। ‘অভয়া কাণ্ড’-এর বিচার এবং কোচবিহারে হামলার তদন্ত কীভাবে এগোয়, তা দেখার জন্য সবাই রাজ্য সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।