বাংলাদেশের রাজনীতির এক মহীরুহের পতন ঘটল। ৮০ বছর বয়সে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা এবং নানাবিধ শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণের খবরে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
নরেন্দ্র মোদীর স্মৃতিচারণ ও শোকবার্তা খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার নিজের এক্স (পুরানো টুইটার) হ্যান্ডেলে মোদী লেখেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল।’ ২০১৫ সালে ঢাকা সফরের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাতের একটি ছবি পোস্ট করে মোদী জানান, দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে খালেদার ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর আগেও নভেম্বরে তাঁর শারীরিক অবনতির সময় মোদী ভারতের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
‘জাতি তার অভিভাবককে হারাল’: ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেসবুক বার্তায় খালেদা জিয়াকে জাতির ‘অন্যতম অভিভাবক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদান ভোলার নয়।’ বিশেষ করে নারী শিক্ষা এবং কন্যা সন্তানদের জন্য ভাতা প্রকল্পের সূচনা করে তিনি যে সামাজিক বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন, তাকে বেনজির বলে উল্লেখ করেন ইউনূস।
হাসিনার শোকবার্তা: রাজনীতির ঊর্ধ্বে সৌজন্য রাজনীতির আঙিনায় দু’জন ছিলেন দুই মেরুর বাসিন্দা। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর প্রয়াণে সৌজন্য বজায় রাখলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় হাসিনা লেখেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবং বিশেষ করে বিএনপি নেতৃত্বের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।’ বাংলাদেশের রাজনীতির এক দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাসের যবনিকা পড়ল আজ।