হিমাচল প্রদেশের কাসৌলিতে অনুষ্ঠিত খুশওয়ন্ত সিং সাহিত্য উৎসবে কংগ্রেস নেতা পি. চিদাম্বরমের (P. Chidambaram) একটি মন্তব্যকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর মন্তব্য কংগ্রেসের এক পুরনো এবং গভীর ক্ষত—১৯৮৪ সালের অপারেশন ব্লু স্টারকে (Operation Blue Star) নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
চিদাম্বরম অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, স্বর্ণ মন্দির (Golden Temple) উদ্ধার করার জন্য ব্লু স্টার অভিযান ছিল “ভুল পথ”। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি একমত যে শ্রীমতি [ইন্দিরা] গান্ধী তার জীবন দিয়ে সেই ভুলের মূল্য চুকিয়েছেন।”
ব্লু স্টার কেন ভুল ছিল?
চিদাম্বরম তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে ব্লু স্টার অভিযানের পদ্ধতিগত সমালোচনা করেন। তিনি যুক্তি দেন যে, সামরিক কর্মকর্তাকে অসম্মান করা তাঁর উদ্দেশ্য নয়, তবে স্বর্ণ মন্দিরের মতো ধর্মীয় স্থানে সেনা পাঠানো ভুল ছিল। তিনি ‘অপারেশন ব্ল্যাক থান্ডার’ (Operation Black Thunder)-এর উদাহরণ দেন, যেখানে সেনাকে বাইরে রেখে পরে সফলভাবে মন্দির উদ্ধার করা হয়েছিল।
তবে তিনি এও বলেন যে, ব্লু স্টার ছিল একটি সামগ্রিক সিদ্ধান্ত—”সেনা, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং প্রশাসনের যৌথ সিদ্ধান্ত। শুধু শ্রীমতি গান্ধীকেই দোষ দেওয়া যায় না।”
বিতর্কের কারণ ও শিখ সমাজের প্রতিক্রিয়া
চিদাম্বরমের এই মন্তব্য শিখদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। শিখ সমাজের একটি বড় অংশ মনে করে:
দায় এড়ানোর চেষ্টা: চিদাম্বরমের মন্তব্যকে অনেকেই ওই সময়কার সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা ও দায় এড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
জাতীয় সংকট: শিখ সম্প্রদায় মনে করে, অপারেশন ব্লু স্টার শুধুমাত্র ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে ঘটেনি, বরং এটা ছিল একটি জাতীয় সংকট, যেখানে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ফলে শিখ ধর্মীয় স্থানকে লক্ষ্য করা হয় এবং সাধারণ শিখদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়।
দীর্ঘদিন ধরে শিখ সমাজের দাবি, ১৯৮৪ সালের ঘটনার জন্য কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখনও সঠিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়নি, যা আজও তাঁদের ক্ষোভের মূল কারণ। চিদাম্বরমের মন্তব্য সেই রাজনৈতিক দ্বিধা এবং অস্বস্তিকেই আবার সামনে এনেছে।