তৃণমূলের দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) এবং মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) পুরনো দ্বন্দ্ব আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। সোমবার লোকসভার চিফ হুইপের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই কল্যাণ একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে চলেছেন। মঙ্গলবার তিনি মহুয়াকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে সরাসরি আক্রমণ করেছেন এবং জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
২০২৩ সালের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ:
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “২০২৩ সালে সংসদে মহুয়া মৈত্র যখন সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন, তখন আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আজ আমাকে তিনি নারী বিদ্বেষী বলে সেই সমর্থনের প্রতিদান দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “যার কৃতজ্ঞতা নেই, তাঁকে সমর্থনের জন্য আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি।” এর মাধ্যমে কল্যাণ বোঝাতে চেয়েছেন যে মহুয়ার অকৃতজ্ঞ আচরণে তিনি মর্মাহত।
পদত্যাগের পর থেকেই উত্তাপ:
সোমবার লোকসভায় চিফ হুইপের পদ ছাড়ার ঘোষণা করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই দিল্লির পার্টি অফিসে তৃণমূল সাংসদদের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে মহুয়াকে দেখে তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “দিনটাই আজ চলে গেল রে!” এরপর সাংবাদিকদের সামনেও তিনি বলেন, “মুখটা দেখে দিনটা খারাপ যাবে… দিন তো খারাপ গেছেই। আমি বলেইছিলাম দিনটা খারাপ যাবে।”
পরে সমাজমাধ্যমে পদত্যাগ প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহুয়া মৈত্রের নাম উল্লেখ করে লেখেন, “মহুয়া মৈত্র প্রকাশ্যে যে ব্যক্তিগত মন্তব্য করেছেন, তা আমি দেখেছি। যে শব্দ ব্যবহার করেছেন, বিশেষ করে একজন সতীর্থ সাংসদকে যেভাবে তিনি শূয়োরের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, বরং সাধারণ শিষ্টাচারের প্রতি তাঁর গভীর অবজ্ঞার প্রতিফলন।”
পুরোনো বিবাদের পুনরাবৃত্তি:
এই দুই সাংসদের দ্বন্দ্ব এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে প্রকাশ্যে এসেছে। কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে কল্যাণের বিতর্কিত মন্তব্যের পর মহুয়া সামাজিক মাধ্যমে দলের অবস্থান তুলে ধরে কল্যাণকে ‘নারী-বিদ্বেষী’ বলে ইঙ্গিত করেছিলেন। সেই সময়ও কল্যাণ পাল্টা বলেছিলেন, মহুয়া নিজেই নারী বিদ্বেষী, কারণ তিনি কৃষ্ণনগরে কোনো মহিলা কর্মীকে রাজনৈতিকভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেন না।
সম্প্রতি দিল্লি নির্বাচন কমিশনের অফিসে যাওয়ার সময়কার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে কল্যাণকে মহুয়াকে লক্ষ্য করে ‘অসভ্য মহিলা’ বলতে শোনা যায়। এই ধরনের ধারাবাহিক বিবাদ তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে আবারও প্রকাশ্যে এনেছে এবং রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।