মাত্র দু’মাস আগেই ৪২২ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত বিহারের প্রথম ডবল-ডেকার উড়ালপুলে ফাটল দেখা দিয়েছে। গত ১১ জুন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই উড়ালপুলের উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনের সময় এটিকে রাজ্যের নগরোন্নয়ন পরিকাঠামোর এক মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করা হলেও, বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতেই এর বেহাল দশা প্রকাশ্যে আসায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পাটনার অশোক রাজপথের ওপর নির্মিত এই তিনস্তর বিশিষ্ট উড়ালপুলটির উদ্দেশ্য ছিল শহরের যানজট কমানো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “এটি শুধু একটি সেতু নয়, একটি নিদর্শন। এটি পাটনার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।” কিন্তু টানা ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই এই নির্মাণের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা যায়, যা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
একটি সংবাদ সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উড়ালপুলের এক অংশে একাধিক ফাটল তৈরি হয়েছে এবং তার পাশে বৃষ্টির জল জমে আছে। এই দৃশ্য দেখে নেটিজেনরা বিহার সরকারের নির্মাণ কাজের মান নিয়ে কড়া সমালোচনা করছেন। একজন এক্স (পূর্বে টুইটার) ব্যবহারকারী লিখেছেন, “বিহার আর দুর্নীতি যেন স্বর্গ থেকে তৈরি হয়ে আসা এক জুটি! এদের বিচ্ছেদ ভাবাই যায় না।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “আগের ট্র্যাক রেকর্ড দেখলে বলতে হয়, এই উড়ালপুল ১৫ দিন টিকেছে, সেটাই তো অনেক! ১২-১৩ দিনেই ধসে পড়া উচিত ছিল।”
উল্লেখ্য, অশোক রাজপথের এই ডবল-ডেকার উড়ালপুলে দুটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তর (লোয়ার ডেক) ১.৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা পাটনা কলেজ থেকে বিএন কলেজ পর্যন্ত বিস্তৃত। দ্বিতীয় স্তর (আপর ডেক) ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা কারগিল চক থেকে পাটনা সায়েন্স কলেজ হয়ে শতাব্দীদ্বার পর্যন্ত বিস্তৃত।
এদিকে, উড়ালপুলে ফাটলের পাশাপাশি লাগাতার বৃষ্টির ফলে পাটনা শহরের একাধিক নিচু এলাকায় জল জমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজ্যের আবহাওয়া দফতর পাটনা, গয়াজি, জামুই এবং ঔরঙ্গাবাদসহ একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করেছে।