মধ্যপ্রদেশের ভোপাল পূর্ব বাইপাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার বড় অংশ ধসে গিয়ে তৈরি হলো প্রায় ৩০ ফুট গভীর গর্ত। সোমবার দুপুরে বিলখিরিয়া গ্রামের কাছে এই ঘটনায় প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা চোখের সামনে ভেঙে পড়ে। যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই সময় কোনো যানবাহন ওই অংশে না থাকায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ধসের ভিডিওটি নির্মাণকারী সংস্থার কাজের মান এবং প্রায় এক দশক আগে নির্মিত সেতুর নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
কেন ধসে গেল রাস্তা?
ভোপাল পূর্ব বাইপাসের ধসে যাওয়া এই অংশটি মধ্যপ্রদেশ সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশনের (MPRDC) আওতাধীন এবং এটি ইন্দোর, জবলপুর, সাগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।
এমপিআরডিসির ডিপার্টমেন্টাল সুপারভাইজার সোনাল সিনহা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, রিইনফোর্সড আর্থ (RE) দেওয়াল ভেঙে পড়ার ফলেই এই ধস নেমেছে। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করছি। তদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।”
কাঠগড়ায় পুরোনো নির্মাণ সংস্থা
জানা গিয়েছে, এই সেতুটি ২০১৩ সালে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু চুক্তির বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় নির্মাণকারী সংস্থা মেসার্স ট্রান্সট্রয় প্রাইভেট লিমিটেডের টেন্ডার ২০২০ সালে বাতিল করা হয়। চুক্তি বাতিলের পর এটি সরাসরি MPRDC-র তত্ত্বাবধানে আসে। তবে সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো সংস্থাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অংশটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
প্রাথমিক কারিগরি প্রতিবেদনে রাজ্য মহাসড়ক-১৮-এর সুখি সেওয়ানিয়া আরওবি (রেলওয়ে ওভার ব্রিজ)-এর একপাশে আরই ওয়াল ভেঙে পড়াকেই ধসের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা এখন অনুপযুক্ত নিষ্কাশন, কাঠামোগত দুর্বলতা অথবা পরিদর্শনের অভাবের মতো বিষয়গুলি খতিয়ে দেখছেন।
উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন
ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের চিহ্নিত করার জন্য MPRDC-র ডিরেক্টর এবং প্রধান ইঞ্জিনিয়ার বিএস মীনা, জেনারেল ম্যানেজার মনোজ গুপ্ত এবং জেনারেল ম্যানেজার আরএস চান্দেলকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এমপিআরডিসির মুখপাত্র আশ্বাস দিয়েছেন, “তদন্ত প্রতিবেদনে যদি অবহেলা বা অনিয়ম প্রমাণিত হয়, তাহলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ব্যারিকেড তৈরি করে রাস্তার একপাশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ট্রাফিক অন্য পথে ঘোরানো হয়েছে। এই ঘটনা ফের একবার মধ্যপ্রদেশে রাস্তা ও পরিকাঠামো নির্মাণের মান নিয়ে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।