বিশ্ব শান্তি এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিল। রাষ্ট্রসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য প্রেরণকারী রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভা ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ১৪ থেকে ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে দিল্লিতে আয়োজিত এই সম্মেলনটি রাষ্ট্রসংঘের সৈন্য প্রেরণকারী দেশগুলির সেনাপ্রধানদের কনক্লেভ নামে পরিচিত।
ভারত বিশ্বাস করে, শান্তিরক্ষা কেবল একটি সামরিক দায়িত্ব নয়, বরং বিশ্ব শান্তি ও মানবতার জন্য একটি যৌথ কর্তব্য।
৩০ দেশের সামরিক প্রধান ও ‘আত্মনির্ভর’ প্রযুক্তি
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রায় ৩০টি দেশের সামরিক প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর মতে, এই সম্মেলন শান্তি, সহযোগিতা এবং বিশ্বব্যাপী দায়িত্বের প্রতি একটি যৌথ প্রতিশ্রুতির প্রতীক।
আলোচনার মূল লক্ষ্য: শান্তিরক্ষায় দেশগুলোর দায়িত্ব, অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা; শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা জোরদার করা; এবং নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মিশনের প্রস্তুতি ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা।
ভারতের প্রদর্শন: ভারত এই সভায় তার দেশীয় প্রযুক্তি এবং ‘আত্মনির্ভর’ উদ্যোগগুলিও প্রদর্শন করবে, যা শান্তিরক্ষা মিশনে কাজে লাগানো যেতে পারে।
বৈঠকের শুরুতে, বিদেশী প্রতিনিধিরা জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে শহীদ সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
নারী শক্তি ও ভারতের অবদান
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ভারত বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। ১৯৫০ সাল থেকে ভারত ২,৯০,০০০ এরও বেশি শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছে। এই মিশনে কাজ করতে গিয়ে ভারত মোট ১৮২ জন সৈন্যকে হারিয়েছে।
নারী শক্তির দৃষ্টান্ত: ২০০৭ সালে ভারতই প্রথম দেশ হিসেবে লাইবেরিয়ায় সম্পূর্ণ মহিলা পুলিশ দল পাঠিয়েছিল। বর্তমানে, সমস্ত মিশনে মহিলা দল (FETs) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে মহিলাদের ক্ষমতায়নে সহায়তা করছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাকেশ কাপুর জানান, এই বৈঠক বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রসংঘের মূল্যবোধকে শক্তিশালী করার একটি বড় প্রচেষ্টা।