হংকংয়ের তাই পো এলাকার ওয়াং ফুক কোর্ট এস্টেটে বুধবার শুরু হওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৮ হয়েছে। প্রায় আট দশকের মধ্যে শহরটির এটি সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। বহুতলগুলি সংস্কারের জন্য বাঁশের মাচা দিয়ে ঘেরা ছিল, এবং এই দাহ্য বাঁশের কাঠামোর কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে। উদ্ধারকারী দলগুলি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৯৪৮ সালের পর সবচেয়ে বড় বিপর্যয়
এই অগ্নিকাণ্ডটি হলো হংকংয়ের ইতিহাসে ১৯৪৮ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে একটি গুদামে লাগা আগুনে ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার শুরু হওয়া এই অগ্নিকাণ্ডের ভয়ঙ্কর দ্রুততা শহরকে স্তম্ভিত করেছে।
অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে ৩ গ্রেফতার
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেস্টিজ কনস্ট্রাকশনের তিন কর্তা—দুই পরিচালক ও এক প্রকৌশল পরামর্শক—অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এই সংস্থাটিই গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই এস্টেটে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার কাজ পরিচালনা করছিল।
আগুন দ্রুত ছড়ানোর প্রধান কারণ
পুলিশ সূত্রে খবর, বহুতল ভবনগুলিতে দ্রুত গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ ছিল দুটি মারাত্মক ত্রুটি:
-
দাহ্য ফোম বোর্ড: জানালার মুখ আটকে রাখা হয়েছিল দাহ্য ফোম বোর্ড (combustible foam boards) দিয়ে, যা আগুনের শিখাকে দ্রুত উপরের দিকে টেনে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
-
দাহ্য বহিরাবরণ: বহিরাবরণে দাহ্য উপাদান (combustible materials on exterior walls) ব্যবহার করায় আগুন মুহূর্তের মধ্যে টাওয়ার জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পার্শ্ববর্তী ভবনগুলিকেও গ্রাস করে।
এই ধরনের দাহ্য নির্মাণ উপাদানের ব্যবহারই বিপর্যয়ের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
ধ্বংসস্তূপের গভীরে উদ্ধারকাজ
উদ্ধারকারী দলগুলি শুক্রবারও জ্বলে যাওয়া টাওয়ারগুলির মধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫টি সাহায্যের আবেদন অজ্ঞাত রয়ে গিয়েছে। স্বজনদের খোঁজে অপেক্ষারত পরিবারদের সহায়তা করতে দমকল বাহিনী একটি কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে পুড়ে যাওয়া ব্লকগুলির ছবি দেখাচ্ছে, যাতে স্বজনদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ধ্বংসের স্তূপের ভিতরে জোরকদমে উদ্ধার কাজ চলছে।