সেকেন্ডের গানেই ভিডিও ডিলিট? ১৯৫৭ সালের আইন বদলানোর আর্জি আপ নেতার!

বর্তমান যুগে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র উপার্জনের প্রধান উৎস ডিজিটাল কন্টেন্ট। কিন্তু ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রামের ‘স্বেচ্ছাচারী’ অ্যালগরিদম ও কপিরাইট স্ট্রাইকের গেরোয় মাঝেমধ্যেই বিপন্ন হয় সেই জীবিকা। এই ডিজিটাল সংকটের সমাধানে এবার সরাসরি সংসদের জিরো আওয়ারে সরব হলেন আম আদমি পার্টির (APP) সাংসদ রাঘব চাড্ডা। তাঁর সাফ কথা, ১৯৫৭ সালের পুরনো আইন দিয়ে ২০২৫-এর ডিজিটাল জগত চলতে পারে না।

“সৃজনশীলতা হুমকির মুখে বাঁচে না”

পাঞ্জাবের সাংসদ রাঘব চাড্ডা সংসদে বলেন, “আজকের দিনে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কেবল বিনোদন নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষের কঠোর পরিশ্রমের ফসল ও সম্পদ। কিন্তু ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে মাত্র ২-৩ সেকেন্ডের কোনও গান বা মিউজিক থাকলে পুরো ভিডিওটিই কপিরাইট স্ট্রাইকের কবলে পড়ে যায়। পরিশ্রমের ফল নষ্ট হয়। কপিরাইট আইন জীবিকা ঠিক করতে পারে, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম তা ঠিক করতে পারে না।”

পুরনো আইনের সীমাবদ্ধতা

রাঘব চাড্ডা মনে করিয়ে দেন যে, ভারতের কপিরাইট অ্যাক্ট তৈরি হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। তখন কম্পিউটার বা ইন্টারনেটের অস্তিত্বই ছিল না। ফলে ওই আইনে ‘ডিজিটাল ক্রিয়েটর’ বা ‘ডিজিটাল কন্টেন্ট’-এর সঠিক কোনও সংজ্ঞাই নেই। বর্তমান আইন কেবল বই বা ম্যাগাজিনের ক্ষেত্রে ‘ফেয়ার ডিলিং’ (সঠিক ব্যবহার) সমর্থন করে, যা ইউটিউবার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য যথেষ্ট নয়।

সংসদে রাঘব চাড্ডার ৩টি প্রধান দাবি:

  • আইন সংশোধন: ১৯৫৭ সালের কপিরাইট আইনে সংশোধনী এনে ‘ডিজিটাল ফেয়ার ডিলিং’ যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা বা অবাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কপিরাইট কন্টেন্ট ব্যবহারের স্পষ্ট নিয়ম চাই।

  • আনুপাতিক হিসেব: পুরো ভিডিও ‘টেকডাউন’ বা ডিলিট করার পরিবর্তে আনুপাতিক নিয়ম চালু করতে হবে। ২ সেকেন্ডের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জন্য পুরো ভিডিওর ক্রেডিট বা আয় কাটা উচিত নয়।

  • যথাযোগ্য যাচাই: কোনও কন্টেন্ট সরাবার আগে বা স্ট্রাইক দেওয়ার আগে মানুষ দিয়ে সঠিক যাচাইকরণ (Human Verification) প্রয়োজন, শুধু যন্ত্রের ওপর ভরসা করা যাবে না।

রাঘব চাড্ডা স্পষ্ট করেছেন যে তিনি পাইরেসির পক্ষে নন, তবে সৃজনশীল কাজকে পাইরেসির তকমা দেওয়াও অন্যায্য। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আইনি সুরক্ষা পাবেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy