ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বানপুর এলাকায় আবারও বড়সড় সোনা পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। শুক্রবার তৎপরতার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) জওয়ানরা এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে এবং তার কাছ থেকে চার কেজিরও বেশি সোনা উদ্ধার করেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির বাড়ি বানপুরের বাগানপাড়া এলাকায়। বিএসএফ মনে করছে, রাজ্যজুড়ে এসআইআর (SIR) আবহের মধ্যেও সীমান্তে পাচারচক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে। এর কিছুদিন আগেই টুঙ্গী বিওপি এলাকায় বিপুল পরিমাণ সোনা পাচারের অভিযোগে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বানপুর এলাকায় একই ধরনের ঘটনা ঘটায় উদ্বেগ বাড়ছে।
ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বিএসএফ। পাচারচক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
এসআইআর বিতর্কের মাঝে ভোটার কার্ড জালিয়াতি: এক এপিক নম্বরে দুই ভোটার!
অন্যদিকে, রাজ্যজুড়ে এসআইআর প্রক্রিয়া চললেও নাকাশিপাড়া ব্লকের ধর্মদা ৪ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দহকুলা গ্রামের বাসিন্দা সাধন বিশ্বাসের ভোটার আই-কার্ডের এপিক নম্বর ব্যবহার করছেন রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের এক ব্যক্তি—এমন অভিযোগ উঠে আসায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সমস্যা যেভাবে সামনে এল:
এসআইআর আবহে সাধন বিশ্বাসের পরিবারের অন্য সদস্যরা এনুমারেশন ফর্ম পেলেও তিনি নিজে ফর্ম না পাওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়। বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, তাঁর ভোট নাকি ‘স্থানান্তরিত’ হয়েছে।
-
পুরোনো সমস্যা: সাধন বিশ্বাস ২০১৪ সালে ভোট অধিকার পান এবং প্রতিটি নির্বাচনে ভোট দেন। কিন্তু বিগত লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে তিনি সমস্যা দেখেন। ব্লক অফিসে যোগাযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস মিললেও দু বছর কেটে যায়। বর্তমানে এসআইআর লাগু হতেই সমস্যাটি প্রকট হয়।
-
অনলাইনে ফাঁস: পরে তিনি অনলাইনে ভোটার আইডি সার্চ করে দেখেন, তাঁর এপিক নম্বরটি ব্যবহার করছেন রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের বস্তা প্রাইমারি স্কুলের ২১৬ নম্বর পার্টের এক বাসিন্দা। সেখানে এপিক নম্বর, নাম এবং বয়স তার সঙ্গে মিল থাকলেও বাবার নাম সামান্য পরিবর্তিত এবং ছবি পুরোপুরি বদলানো—এই তথ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যান সাধন বিশ্বাস।
অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি ও পলায়ন:
সাধন বিশ্বাস রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের বিডিও–র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দু’পক্ষকেই প্রমাণপত্রসহ দফতরে হাজির হতে বলা হয়। সাধন বিশ্বাস উপস্থিত হলেও, অভিযুক্ত ব্যক্তি হাজির হননি। সূত্র মারফৎ জানা যায়—অভিযুক্ত ব্যক্তি বর্তমানে বাড়িতে নেই, পরিবারের সদস্যরাও বাড়িছাড়া।
সাধন বিশ্বাস ফোনে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি স্বীকার করেন—টাকার বিনিময়ে ভোটার কার্ড করানোর সময় এমনটি হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়ে তিনি ভোটার কার্ড “তুলে নিয়েছিলেন”—এমনই দাবি সাধন বাবুর। ফোনে তাদের কথোপকথনের রেকর্ডও অভিযোগকারীর কাছে রয়েছে।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিজেপির কটাক্ষের পাল্টা কটাক্ষে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন এমন জালিয়াতির অভিযোগ রাজ্যের ভোটার তালিকা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।