শীতের রাতে পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে চোরের উপদ্রব নতুন নয়, কিন্তু কোলাঘাটের বাবুয়া গ্রামে যা ঘটল তা হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। এক অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকা, সোনাদানা তো বটেই, এমনকি বাচ্চার সোয়েটার ও অন্তর্বাস পর্যন্ত নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। সবথেকে রহস্যজনক বিষয় হলো, বাড়িতে পোষ্য কুকুর থাকা সত্ত্বেও চুরির সময় কেউ বিন্দুমাত্র টের পাননি। পরিবারের দাবি, কোনো রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে চোরের দল।
অপারেশন ‘নিশikutুম্ব’ বাবুয়া গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী বিমল বিশ্বাস তাঁর ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতনিকে নিয়ে থাকেন। প্রতিদিনের মতো রবিবার রাতেও সব দরজা বন্ধ করে ঘুমান তাঁরা। অভিযোগ, গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা কার্নিশ বেয়ে ছাদে ওঠে এবং চিলেকোঠার দরজা দিয়ে বাড়ির ভেতর ঢোকে। এরপর আলমারি ও লকার ভেঙে তছনছ করে সব লুঠ করে। বিমলবাবু জানান, “সকালে পুত্রবধূ উঠে দেখে সব লণ্ডভণ্ড। আমাদের অনুমান চোরেরা এমন কিছু স্প্রে করেছিল যে আমাদের সঙ্গে কুকুরেরও ঘুম ভাঙেনি।”
কী কী চুরি হলো? প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নগদ টাকা ও সোনা-রুপো মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার সামগ্রী খোয়া গেছে। তবে চোরদের অদ্ভুত আচরণে অবাক পুলিশ। আলমারি থেকে গয়নার পাশাপাশি গৃহকর্তার নাতনির দামী জ্যাকেট, নতুন সোয়েটার এবং এমনকি অন্তর্বাস পর্যন্ত নিয়ে পালিয়েছে তারা। যাওয়ার সময় নিজেদের একটি পুরনো সোয়েটার ফেলে রেখে গেছে দুষ্কৃতীরা।
তদন্তে পুলিশ খবর পেয়েই কোলাঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গোটা বাড়ির ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, এটি কোনো পেশাদার চোর চক্রের কাজ। শীতের রাতে এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হলেও এই ধরণের রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।