যখন শহরের নামী পুজো কমিটিগুলো কোটি টাকার বাজেটে থিম তৈরি করে, ঠিক তখনই সুন্দরবনের এক অজপাড়াগাঁ ‘নিউ সানরাইজ সংঘে’ তৈরি হলো এক অনন্য সামাজিক নজির। এখানকার ৭০ জন মহিলা তাঁদের প্রাপ্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুদান এবং ৩০ জন প্রবীণ পুরুষ নিজেদের বার্ধক্য ভাতার টাকা দিয়েই সম্মিলিতভাবে আয়োজন করলেন দুর্গাপূজা। সরকারি প্রকল্পের অর্থই যে মানুষের উৎসবকে মহোৎসবে পরিণত করে তুলতে পারে, সুন্দরবনের এই গ্রামীণ পুজো তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সম্মিলিত প্রয়াসে প্রাণের সঞ্চার
অর্থের অভাব থাকলেও মনোভাবের দিক থেকে এই গ্রামের মানুষজন যে কতটা সমৃদ্ধ, এই উদ্যোগই তার প্রমাণ। ক্লাবের সম্পাদক অলকেশ বৈদ্য জানিয়েছেন, “সরকারি সাহায্য ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে, এটাই আমাদের আশা। এই সহযোগিতাই আমাদের গ্রামীণ পুজোর প্রাণ।”
এবারের পুজোর নেতৃত্বে রয়েছেন সভানেত্রী সুনিতা মৃধা, সম্পাদিকা সবিতা মৃধা এবং কোষাধ্যক্ষ জয়ন্তি মৃধা। তাঁদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং সরকারি সহায়তাকে সঙ্গে নিয়েই দুর্গোৎসব সুন্দরবনের বুকজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে এক নতুন বার্তা— সমাজের প্রতিটি মানুষ তাঁদের সামান্য অবদান দিয়েই গড়তে পারেন একতার এক অনন্য উদাহরণ।
উৎসব ঘিরে রোজগারের সুযোগ
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। দূরদূরান্ত থেকে প্যান্ডেলে ভিড় জমছে দর্শনার্থীদের। গ্রামীণ পরিবেশে মিলনমেলার আবহে রাতভর ঢাকের তালে মাতছেন গ্রামবাসী।
সবচেয়ে বড় কথা, এই পুজোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দোকানদার ও কারিগরেরা রোজগারেরও সুযোগ পেয়েছেন। সরকারি অনুদান ও মানুষের মিলিত প্রয়াসে সুন্দরবনের এই দুর্গোৎসব এখন উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক একতা ও সহমর্মিতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।