এই জগতের সবথেকে বড় যোদ্ধা হলেন একজন মা। তিনি একদিকে যেমন সন্তানকে স্নেহ দিয়ে বড় করে তোলেন, তেমনই আবার শত্রুর থেকে রক্ষা করতে হাতে খড়গ তুলে নিতেও দ্বিধা করেন না। সেই ‘মা’-এর বিভিন্ন রূপ, স্নেহ ও ত্যাগকেই শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে জামবনী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এই বছর তাদের ৩২তম বর্ষের পুজোয় থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে এক আবেগঘন ভাবনা: ‘মা কার?’
থিমের কেন্দ্রে সমাজের কঠিন বাস্তব
আয়োজক কমিটির মূল লক্ষ্য সমাজে মাতৃত্বের মর্যাদা ও মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা। বর্তমান সমাজের এক কঠিন বাস্তব চিত্র মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে— যুগের ছেলেমেয়েদের মায়ের প্রতি অনীহা। জন্ম থেকে বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত সন্তানের জীবনে মায়ের যে বিভিন্ন রূপ এবং অপরিসীম ত্যাগ, সেটিকেই শৈল্পিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মণ্ডপ জুড়ে এক মা কীভাবে বিভিন্ন রূপে দশভূজা হয়ে সংসার সামলান, সেই চিত্রটিই সকলের নজর কাড়ছে।
বাংলার শিল্পকলায় সেজে উঠেছে মণ্ডপ
জেলার আকর্ষণীয় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম জামবনীর এই পুজো। সাবেকিয়ানা ছেড়ে এবার থিমে ভরসা রেখেছে ক্লাবটি। পুজো মণ্ডপে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীর চোখে পড়বে বাংলার শিল্প সংস্কৃতির অনন্য ছাপ। মণ্ডপের সামনে রয়েছে বিশাল আকারের দেবী মুখ। এছাড়াও ছোট-বড় দুর্গা মুখ, নয়ন, কুলো, কাঠের পুতুল সহ বাংলার নানা লোকশিল্প কলায় সেজে উঠেছে গোটা মণ্ডপ।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, উচ্চ-নীচ, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ভুলে যেভাবে একজন মা নিজের সন্তানদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ রাখেন না, সেই একাকার হওয়ার বার্তা নিয়েই এবারের মাতৃ আরাধনা। প্যান্ডেলসজ্জা থেকে প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব উপকরণের ব্যবহার করা হয়েছে। খড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।
কলকাতার পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলার এই অভিনব থিম ইতিমধ্যেই স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনার্থীদের ভিড় টানতে শুরু করেছে।