প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেছেন। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনি বিচ্ছেদ না হলেও, বহু আগেই জীবনের পথ আলাদা হয়েছে শোভন ও তাঁর স্ত্রী বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। ঠিক এই পরিস্থিতিতে, দলের সহকর্মী হিসেবে শোভনের ঘরে ফেরাকে কীভাবে দেখছেন রত্না? তাঁর উত্তর ছিল সংযত, তবে যথেষ্ট তীক্ষ্ণ।
🗣️ ‘শিরায় তৃণমূল, কিন্তু বাইরে বিজেপি!’
দলের অভ্যন্তরে ফিরে এসে শোভন চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন, “আমার শিরায়-ধমনীতে তৃণমূল।” শোভনের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই কটাক্ষ করেন বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেন,
“ওঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। অনেকদিন ঘরে বসেছিলেন। কাজের মানুষ ঘরে বসে থেকে অসুস্থ হয়ে যান। এবার দলের কাজ করুন।”
তবে এর পরই শোভনের পুরনো অবস্থান নিয়ে কটাক্ষ করে রত্না বলেন,
“শিরায় তৃণমূল, কিন্তু বাইরে বিজেপি! তখন তো মনে হয়েছিল বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। বিজেপি টিকিট না দিলে ছেড়ে দিলেন। তারপরও তৃণমূলে আসতে অনেক দেরি করলেন।”
❓ বেহালা পূর্বের টিকিট নিয়ে জল্পনা
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তনের পরই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে যে, বেহালা পূর্ব থেকেই কি আবার তাঁকে প্রার্থী করা হতে পারে? এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন।
“আমরা দলের সৈনিক। সিদ্ধান্ত নেন দিদি ও অভিষেক। যদি দল মনে করে ওঁকেই দাঁড় করাবে, সেটা দলীয় সিদ্ধান্ত, আমি মেনে নেব।”
😠 বৈশাখীর নাম উঠতেই ‘কঠোর’ বিরক্তি
তবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই রত্না চট্টোপাধ্যায়ের গলায় আসে স্পষ্ট বিরক্তির সুর। কঠোর কণ্ঠে তিনি জানিয়ে দেন,
“ওই মহিলার বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আমার সঙ্গে যায় না। শোভন বহুদিনের রাজনীতিবিদ, কিন্তু ওই মহিলাকে নিয়ে উত্তর দিতে হবে, সে জায়গায় আমি নামিনি।”
রাজনীতির মঞ্চে প্রাক্তন দম্পতি এখন একই দলের দুই কর্মী হিসেবে মুখোমুখি। এখন দেখার, তৃণমূলের অভ্যন্তরে এই ‘তিন কোণের সমীকরণ’ রাজ্যের শাসক দল কীভাবে সামলায়। এই পরিস্থিতি দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন করে চাপানউতোর সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।