মেয়েদের ভালো ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার এক বিরল উদ্যোগ নিয়েছেন বাঁকুড়ার ছাতনা অঞ্চলের দুমদুমির বাসিন্দা এক আদিবাসী গৃহবধূ—ভারতী মুদি। সামাজিক রীতিনীতি মেনে শাড়ি পরেই তিনি সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে মেয়েদের ফুটবলের তালিম দিয়ে চলেছেন।
অধরা স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা:
ভারতী দেবীর কথায়, ছোটবেলা থেকেই তাঁর ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু মেয়ে হওয়ার কারণে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। তাই তিনি এখন আদিবাসী মেয়েদের ফুটবলের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজের সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চাইছেন।
ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই মহৎ কাজে ভারতী দেবী নিজের মেয়েকেও সামিল করেছেন। তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে আজ তাঁর মেয়ে একজন সফল রেফারি। তাঁর হাত ধরে প্রশিক্ষণ নেওয়া এক ডজনেরও বেশি মেয়ে রাজ্যস্তরে ফুটবল খেলেছেন এবং তাঁদের মধ্যে অনেকে ফুটবল কোটায় চাকরিও পেয়েছেন।
প্রশিক্ষণার্থীদের অভিজ্ঞতা:
মাঠে ফুটবল খেলা শেষে একদল কিশোরী জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতী দেবীর কাছে এই চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিকে বাড়ি থেকে প্রবল বাধা এলেও এখন তারা খুবই খুশি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল খেলে তারা সম্মান ও সমর্থন পেয়েছে।
ভারতী দেবীর আক্ষেপ:
তবে ভারতী দেবীর আক্ষেপ, আজও মেয়েদের ফুটবল খেলা নিয়ে সমাজে একটা অনীহা ও বাধা রয়েছে। এর পাশাপাশি, অধিকাংশ আদিবাসী মেয়ের অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যাওয়াটা তাঁর কাছে বড় বাধা। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। শুরুতে ভালো সাড়া না পেলেও তিনি বিনামূল্যে ফুটবলের প্রশিক্ষণ দেওয়া চালিয়ে যাচ্ছেন, যা স্থানীয় মেয়েদের জীবনে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।