‘মেট্রো জটের জন্য দায়ী রাজ্য সরকার’! মমতাকে নিশানা করে রিপোর্ট দিলেন রেলমন্ত্রী

কলকাতা মেট্রো সম্প্রসারণ প্রকল্পে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার জন্য সরাসরি রাজ্য সরকারের ওপর দায় চাপালেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বুধবার সংসদে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি জানান, ‘রাজ্যের বারবার অসহযোগিতা এবং বিভিন্ন অনুমোদন (NOC) আটকে রাখার কারণেই বহু গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো করিডোরে কাজ থমকে আছে।’

রেলমন্ত্রীর দাবি, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার ফলে বছরের পর বছর ধরে কাজ ঝুলে আছে:

  • জোকা-এসপ্ল্যানেড (Joka-Esplanade) লাইন: ১৪ কিমি লাইনের মাঝেরহাট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ৬.২৬ কিমি কাজ অসম্পূর্ণ। কারণ, এসপ্ল্যানেডের কাছে ড. বি.সি. রায় মার্কেটের ৫২৮টি দোকান এখনও সরানো হয়নি। রেল অস্থায়ী স্থানান্তরের ব্যবস্থা করলেও রাজ্যের কারণে ৩.৫ বছর ধরে এই কাজ ঝুলে আছে।

  • খিদিরপুর স্টেশনের জমি: কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের ৮৩৭ বর্গমিটার স্থায়ী এবং ১,৭০২ বর্গমিটার অস্থায়ী জমি পেতে লেগেছে পাঁচ বছরেরও বেশি। ২০২০ সালের আগস্টে প্রস্তাব পাঠানো হলেও অনুমোদন মেলে ২০২৫ সালের জুলাইয়ে।

  • নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট করিডোর (চিংড়িঘাটা সেকশন): ২২.২ কিমি এই অংশে রেলওয়ে ডাইভারশন রোড তৈরি করলেও রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে এনওসি (NOC) না মেলায় ১০ মাস ধরে কাজ আটকে আছে।

  • নোয়াপাড়া-বারাসত লাইন: ২৩,০০০ বর্গমিটার জমি অধিগ্রহণ আটকে রয়েছে। ১,২৭৭টি ঝুপড়ি এবং ৭৬৪টি দোকান সরানো হয়নি। ফলে কাজ স্থগিত।

  • বরানগর-ব্যারাকপুর-দক্ষিণেশ্বর রুট: ১৪.৫ কিমির মধ্যে ১২.৫ কিমি কাজ ১৩ বছর ধরে বন্ধ। ২০১১ সালে রাজ্য পাইপলাইন সরানোর চুক্তি করলেও এনওসি মেলেনি।

পাল্টা রাজ্যের অভিযোগ

রেলমন্ত্রীর এই দাবির বিপরীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে জানিয়েছিলেন, তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন (২০০৯-২০১১) এই প্রকল্পগুলির নীলনকশা তৈরি করেছিলেন। তাঁর দাবি, জমি, রাস্তা এবং পুনর্বাসন সবই রাজ্য সরকার দিয়েছে, উল্টে কেন্দ্র ইচ্ছে করে প্রকল্পগুলির গতি ধীর করেছে।

সংসদে রেলমন্ত্রীর এই লিখিত বক্তব্য কলকাতা মেট্রোর ভবিষ্যৎ এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy