মিশরে আয়োজিত শার্ম আল-শেখ শান্তি সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে। ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে আয়োজিত এই সমাবেশে ট্রাম্প একদিকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ভূয়সী প্রশংসা করেন, অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ‘খুব ভালো বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন।
মঞ্চের ওপর ট্রাম্পের পিছনেই দাঁড়িয়েছিলেন শেহবাজ শরিফ। সেখানেই ট্রাম্প একে একে ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মন্তব্য করেন।
‘প্রিয় ফিল্ড মার্শাল’ এবং ভারত-পাক শান্তি নিয়ে প্রশ্ন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে তাঁর “প্রিয় ফিল্ড মার্শাল” বলে অভিহিত করেন। তিনি গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আসিম মুনির এবং প্রধানমন্ত্রী শরিফের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। ট্রাম্প বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শরিফ, এবং আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আমার প্রিয় পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল, যিনি এখানে নেই, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখানে আছেন।”
এরপরেই ট্রাম্প ভারতের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “খুব ভাল বন্ধু” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন “মোদি চমৎকার কাজ করেছেন।”
এখানেই না থেমে আচমকা ট্রাম্প পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে শরিফকে জিজ্ঞাসা করেন:
“আমি মনে করি পাকিস্তান এবং ভারত একসঙ্গে খুব সুন্দরভাবে বসবাস করবে, তাই না?”
এই সরাসরি প্রশ্নের মুখে দৃশ্যতই অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়েন পাক প্রধানমন্ত্রী। ট্রাম্প অবশ্য এরপরও বলতে থাকেন, “তাঁরা আছেন, তাঁরা আছেন… এবং তাঁরা দু’জনই মহান… আমি আপনাকে (শেহবাজ) বলছি… নেতা, যতদূর আমি উদ্বিগ্ন, মহান নেতা।”
ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য ফের মনোনয়ন
পরে মঞ্চে উঠে শেহবাজ শরিফ ট্রাম্পকে ‘ভারত-পাক যুদ্ধ বন্ধ করার’ জন্য ধন্যবাদ জানান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তিনি “শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয় বরং মধ্যপ্রাচ্যেও লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচানোর” জন্য ট্রাম্পকে আবারও নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, ইসলামাবাদ বেশ কয়েকবার মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের অবসান ঘটানোর ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন করেছে। এমনকী শরিফ সরকার ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীতও করেছিল।
ভারতের অবস্থান
তবে ভারত ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে যে, পাকিস্তানের সঙ্গে শত্রুতা বন্ধের বিষয়ে সমঝোতা দুই সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)-এর মধ্যে সরাসরি আলোচনার পরেই হয়েছে। গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষ বন্ধের জন্য একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিল, যার কৃতিত্ব ট্রাম্প দাবি করেন।