যেখানে পণের চাপে প্রতিনিয়ত অসংখ্য বিয়ে ভেঙে যাওয়ার খবর আসে, সেখানে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগর থেকে উঠে এল এক অসাধারণ মানবিকতার গল্প। ২৬ বছর বয়সী যুবক অবধেশ রানা নিজের বিয়ের আসরে এক নতুন ছবি তৈরি করলেন। কনের পরিবারের দেওয়া ৩১ লক্ষ টাকার পণ (Dowry) ফিরিয়ে দিয়ে তিনি প্রতীকী শুভেচ্ছা হিসেবে গ্রহণ করলেন মাত্র ১ টাকা।
বিয়ের আসরে বরের সাহসী পদক্ষেপ
গ্রামের উঠোনে যখন বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে উৎসবের আবহ, তখনই সকলকে চমকে দেন বর অবধেশ। অনুষ্ঠানের প্লেটে সাজানো টাকার দিকে হাতজোড় করে তিনি শান্ত গলায় ঘোষণা করেন:
“এটা নেব না। এই টাকা কনের পরিবারের পরিশ্রমের ফসল। আমার কোনও অধিকার নেই।”
মুহূর্তের জন্য আসর স্তব্ধ হয়ে গেলেও, দ্রুত শুরু হয় হাততালির ঝড়। অবধেশের এই সিদ্ধান্ত যেন সমাজে পণপ্রথার বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদ।
পিতৃহারা কনের পাশে বরের পরিবার
কনে অদিতি করোনা মহামারীর সময় তাঁর বাবাকে হারিয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি মামারবাড়ি, সুলতানপুর জেলার শাহাবুদ্দিনপুর গ্রামে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। স্নাতকোত্তর শেষ করার পরই তাঁর বিয়ে ঠিক হয় অবধেশের সঙ্গে।
বিয়ের আগের এই মহৎ সিদ্ধান্তে অবধেশের পরিবার প্রথম থেকেই পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। অদিতির পরিবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানায়, এমন কঠিন সময়ে অবধেশের এই আচরণ তাঁদের কাছে আশীর্বাদের মতো। এই ঘটনায় মাল্যদান, কন্যাদান—সব রীতিই সম্পন্ন হয় এক শান্ত ও আবেগঘন পরিবেশে।
এই ঘটনার পর থেকেই মুজফ্ফরনগরের বিভিন্ন গ্রামে অবধেশকে নিয়ে প্রশংসা শুরু হয়েছে। তাঁর এই পদক্ষেপ সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবং পণপ্রথার বিরুদ্ধে আরও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দিয়েছে।