বড়দিনের সকালেই রক্ত ঝরল কোচবিহারের মাথাভাঙার হাজরাহাট এলাকায়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বাবা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনাকে স্রেফ ‘গ্রাম্য বিবাদ’ বলে মানতে নারাজ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সাফ দাবি, এটি একটি সুপরিকল্পিত ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’, যাকে পুলিশ পারিবারিক বিবাদ বলে লঘু করার চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে হাজরাহাট এলাকায় সরকার পরিবারের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় শিকদার পরিবারের সদস্যরা। হামলায় মৃত্যু হয় মানব সরকার ও তাঁর ছেলে যাদব সরকারের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরিবারের আরও ছয় সদস্য। শুভেন্দু অধিকারী এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে নিহতদের বিজেপির ‘সক্রিয় কর্মী’ হিসেবে দাবি করেন। এমনকি প্রমাণ হিসেবে তাঁদের সদস্যপদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন তিনি। শুভেন্দুর অভিযোগ, “নিহত মানব সরকার যুব মোর্চার মন্ডল সহ-সভাপতি ছিলেন। তৃণমূলের পরিচিত গুন্ডারাই এই হামলা চালিয়েছে। এখন পুলিশ র্যাফ নামিয়ে এলাকা ঘিরে রেখেছে যাতে আমাদের নেতারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না পারেন।”
তবে রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে নিহতের পরিবারের অন্দরে। নিহত যাদব সরকারের জেঠু বিজয় সরকার দাবি করেছেন, এই বিবাদের মূলে রয়েছে একটি ‘প্রেমঘটিত’ বিষয়। শিকদার পরিবারের এক মেয়ের সঙ্গে যাদবের সম্পর্ক ছিল, যা নিয়েই দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপড়েন। যদিও শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, তৃণমূল এই ব্যক্তিগত সম্পর্কের দোহাই দিয়ে একটি রাজনৈতিক খুনকে অরাজনৈতিক করার চেষ্টা করছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এলাকা বর্তমানে থমথমে, মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।