মহালয়ার দিন ছোট্ট বালিকা সেজে চাল-কলা ভিক্ষা চেয়েছিলেন মা! উত্তর কলকাতার ‘শ্যামসুন্দরী’র মহিমা জানলে অবাক হবেন।

বাংলার অলৌকিক মন্দিরগুলোর ইতিহাসে এক রহস্যময় এবং ভক্তিপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন উত্তর কলকাতার মা শ্যামসুন্দরী। ভক্তদের কাছে তিনি কেবল এক বিগ্রহ নন, বরং ‘জীবন্ত কালী’। কথিত আছে, আজও মন্দির চত্বরে দেবীর নূপুরের নিক্বণ শোনা যায়, কখনও বা তাঁকে ফিসফিস করে কথা বলতে শোনেন ভক্তরা। এই অলৌকিক টানেই প্রতিদিন শহরতলী তো বটেই, এমনকি সুদূর অসম থেকেও ভক্তরা ছুটে আসেন এই মন্দিরে।

মন্দিরের সেবায়েতদের মুখে প্রচলিত রয়েছে এক বিস্ময়কর কাহিনি। একবার মহালয়ার দিন মন্দিরের পুরোহিত বাজারে গিয়ে দেখেন বছর পাঁচেকের এক ছোট্ট মেয়ে মা কালীর বেশ ধরে চাল-কলা ভিক্ষা চাইছে। ক্ষুধার্ত মেয়েটিকে ভিক্ষা না দিয়ে বরং তিরস্কার করে তাড়িয়ে দেন পুরোহিত। কিন্তু সেই রাতেই মন্দিরের গর্ভগৃহে ঘটে যায় অভাবনীয় কাণ্ড। অমাবস্যার অন্ধকারে ঘিয়ের প্রদীপের আলোয় পুরোহিত দেখেন, মহাদেবের বুকের ওপর মা কালী নেই! শিউরে উঠে তিনি যখন পিছন ফেরেন, তখন দেবীর মল বাজার সেই বালিকার রূপেই প্রকট হন। দেবী জানান, তিনি কেবল ধনীর নন, তিনি দরিদ্রেরও মা।

মায়ের সেই স্বপ্নাদেশের পর থেকেই এখানে দেবী ‘শ্যামসুন্দরী’ হিসেবে শিশুকন্যা রূপে পূজিতা হন। যেহেতু মা এখানে বালিকা রূপী, তাই এই মন্দিরে কোনও অম্বুবাচী পালিত হয় না। আরও একটি বিশেষত্ব হল, এখানে দেবীকে কোনও আমিষ ভোগ দেওয়া হয় না। মা সন্তুষ্ট হন কেবল একমুঠো আতপ চাল আর একটি পাকা কলায়। মায়ের নির্দেশেই এই মন্দিরে আসা কোনও ভক্তকে প্রসাদ না দিয়ে ফেরানো হয় না। ভক্তিভরে প্রার্থনা করলে মা এখানে খালি হাতে কাউকে ফেরান না বলেই বিশ্বাস অগণিত মানুষের।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy