উত্তরপ্রদেশের মথুরায় (বৃন্দাবন) প্রেমানন্দ মহারাজ-এর সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ২৩ বছর বয়সী এক যুবতীকে বারবার ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ধর্মীয় আস্থার অপব্যবহার এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রতারণার এক ভয়াবহ চিত্র সামনে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ২৪ বছর বয়সী যুবক সুন্দরম সোশ্যাল মিডিয়ায় আগ্রা নিবাসী ওই যুবতীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিল। সে জানত যে যুবতীটি বৃন্দাবনের সুপরিচিত আধ্যাত্মিক গুরু প্রেমানন্দ মহারাজের ভক্ত।
যেভাবে ঘটনাটি ঘটে:
- মিথ্যা প্রলোভন: গত ১০ আগস্ট অভিযুক্ত যুবকটি যুবতীকে মেসেজ করে জানায় যে সে মহারাজের সঙ্গে তার একান্ত সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে পারে। ১২ সেপ্টেম্বর সে জানায়, সাক্ষাতটি ‘চূড়ান্ত’ হয়েছে।
- আশ্রমের বদলে হোটেলে: যুবতীটি তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বৃন্দাবনে পৌঁছায়। অভিযুক্ত সুন্দরম তার ভাইকে গাড়ি পার্কিংয়ে অপেক্ষা করতে বলে, এবং যুবতীকে মোটরবাইকে নিয়ে যায়। মহারাজের আশ্রমে না নিয়ে গিয়ে সে যুবতীকে একটি হোটেলে নিয়ে যায়।
- নেশাগ্রস্ত করে নির্যাতন: পুলিশ পরিদর্শক ধর্মেন্দ্র সিং জানান, হোটেলে অভিযুক্ত যুবতীকে মাদক মেশানো কফি পান করায়। কফি পান করার পর যুবতী জ্ঞান হারালে অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণ করে এবং আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে নেয়।
- ব্ল্যাকমেইল ও বারবার ধর্ষণ: এরপর অভিযুক্ত ঐ কন্টেন্ট ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে যুবতীকে বারবার ধর্ষণ করে।
ভীতসন্ত্রস্ত যুবতীটি শেষ পর্যন্ত সাহস সঞ্চয় করে গত বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শনিবার অভিযুক্ত সুন্দরমকে গ্রেফতার করে এবং তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
মথুরা এসপি (সিটি) রাজীব কুমার নিশ্চিত করেছেন যে, যুবতীর বয়ানের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ধারা ৬৪(১) (ধর্ষণ) এবং ৩৫১ (অপরাধমূলক ভীতিপ্রদর্শন) এর অধীনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বর্তমানে এই অপরাধ সম্পর্কিত ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।
পুলিশ আরও স্পষ্ট করেছে যে এই ঘটনা বা অভিযুক্তের সঙ্গে প্রেমানন্দ মহারাজ বা তাঁর আশ্রমের কোনও যোগ নেই। আধ্যাত্মিক গুরুর নামটি কেবল শিকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
