উত্তরবঙ্গের হড়পা বানের ক্ষতচিহ্ন এখনও বাংলার মানুষের মনে গভীর দাগ কাটছে। এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মূল কারণ হিসেবে এবার সরাসরি ভুটানকে দুষলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ভুটানের জলেই এই বন্যার উৎপত্তি, তাই ভুটানকেই এই দুর্যোগের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সোমবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার বামনডাঙায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
৪ অক্টোবর অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে নাগরাকাটার বামনডাঙা এলাকায় ডায়না ও খাটিয়া নদীর জলে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আবারও ভুটানের দিকেই আঙুল তুলেছেন।
ভুটানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে বলছি ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন গড়া হোক এবং তার সদস্য করা হোক বাংলাকে। ভুটানের জলেই এত বড় ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই ওরা ক্ষতিপূরণ দিক।”
বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ঘোষণা:
বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক সহায়তা এবং প্রতিশ্রুতির কথা ঘোষণা করেন:
মৃতদের পরিবার: যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা এবং পরিবার পিছু একটি করে চাকরির ঘোষণা করেন তিনি। বামনডাঙায় সাত জনের হাতে চাকরির কাগজপত্রও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি: নাগরাকাটার ভেঙে যাওয়া সেতুটি পুনর্নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
বাড়ি ও কৃষিজমি: দুর্যোগে যাঁদের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। যাঁদের কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে, তাঁরা শস্য বিমার টাকা পাবেন।
নথিপত্র পুনরুদ্ধার: যাঁদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বা হারিয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য বিশেষ ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হবে।
উত্তরবঙ্গের এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে প্রতিবেশী দেশকে দায়ী করা এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো— এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।