বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি ভাষা ও ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নিজের X (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে তিনি সম্প্রতি একটি হিন্দি চলচ্চিত্রে ক্ষুদিরাম বসুর নাম বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী তার পোস্টে লেখেন, “সম্প্রতি একটি হিন্দি ছবিতে বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ‘সিং’ বলা হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের কেন অপমান করা হচ্ছে? পথিকৃৎ অমর বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ধরেও টানাটানি করবে ভাষা-সন্ত্রাসীরা?” তিনি অভিযোগ করেন যে, মেদিনীপুরের এই শহিদ বিপ্লবীকে সিনেমায় পাঞ্জাবের বাসিন্দা হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির উপর সরাসরি আঘাত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সবসময় দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের প্রতীক এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।” তিনি আরও মনে করিয়ে দেন যে, তার সরকার ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থান মহাবনী এবং সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। মহাবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি গঠন করা হয়েছে, শহিদের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে এবং একটি মেট্রো স্টেশনের নামও তার নামে রাখা হয়েছে।
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘কেসারি চ্যাপ্টার ২’ নামের একটি সিনেমা নিয়ে। গত জুনে এই ছবির প্রযোজকদের বিরুদ্ধে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃতির অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী তার পোস্টে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, বাংলার বিপ্লবীদের ইতিহাস বিকৃত করার যেকোনো চেষ্টা রাজ্য সরকার মেনে নেবে না। তিনি মনে করেন, এটি শুধুমাত্র একজন বিপ্লবীর প্রতি অসম্মান নয়, বরং বাংলা ভাষা ও ইতিহাসের ওপর সরাসরি আঘাত। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমর্থনে অনেকেই একমত হয়েছেন। তাদের দাবি, ক্ষুদিরাম বসু শুধু মেদিনীপুর বা বাংলার নন, সমগ্র ভারতের গর্ব। তাই তার পরিচয় এবং অবদান নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।