বহু ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের সহাবস্থান যে রেলশহরকে ‘মিনি ইন্ডিয়া’ পরিচিতি দিয়েছে, সেই খড়্গপুরে পালিত হলো এক শতকেরও বেশি পুরনো ঐতিহ্য—দশেরা উৎসব বা রাবণ দহন অনুষ্ঠান। অন্যান্য বছরের মতো এবারও বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় প্রতীকী রাবণ বধের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশ উদযাপন করা হলো।
দীর্ঘ ১০০ বছরের জার্নি পার করে এবার এই উৎসবের ১০১তম বর্ষ উদযাপিত হলো। প্রথমের দিকে প্রবল বৃষ্টি বিপত্তি ঘটালেও, সন্ধ্যা নাগাদ আকাশ পরিষ্কার হতেই খড়্গপুর শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সেটেলমেন্ট এলাকার ‘রাবণ পোড়া মাঠে’ সুষ্ঠুভাবে এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
এসপি-র হাতে রাবণ দহন, চমক ছিল হায়দরাবাদি বাজি
উৎসব ঘিরে উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার উৎসাহী দর্শক। বহু বছরের প্রাচীন এই রাবণ দহন উৎসবকে ঘিরে শুধু খড়্গপুর নয়, জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রথা অনুযায়ী, রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে রাবণ দহন বা রাবণ বধের সূচনা করেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিক, প্রাক্তন বিধায়ক তথা দশেরা কমিটির সভাপতি প্রদীপ সরকার-সহ বিশিষ্টজনেরা।
রাবণের প্রতীকি মূর্তিতে আতশবাজি লাগিয়ে তাকে পোড়ানো হয়। তবে এবারের উৎসবে বাড়তি পাওনা ছিল হায়দরাবাদের বিশেষ আতশবাজি প্রদর্শনী, যা দর্শকদের মধ্যে বিপুল উন্মাদনা তৈরি করে।
মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা: খড়্গপুরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য
খড়্গপুর শহরে একদিকে যেমন মাতা পুজো ও দেবী দশভুজা দুর্গার আরাধনা হয়, তেমনই শতবর্ষের এই দশেরা উৎসব এই শহরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের প্রতীক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ঐতিহ্যমণ্ডিত দশেরা উৎসব বা রাবণ বধ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগেই শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
বৃষ্টি-বিঘ্ন কাটলে অবশেষে রাবণ দহনের মাধ্যমে অশুভ শক্তির ওপর শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত হলো, যার সাক্ষী থাকল ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খড়্গপুর।