২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে বড়সড় সাংগঠনিক ধাক্কা খেল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের যুব সভাপতির বহিষ্কারের প্রতিবাদে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়িতে তৃণমূল ছাড়লেন প্রায় ৯০০ কর্মী-সমর্থক। আপাতত তাঁরা অন্য কোনো দলে যোগ না দিলেও, এই গণ-পদত্যাগ আসন্ন নির্বাচনের আগে শাসক দলের অন্দরে তীব্র অস্বস্তি তৈরি করল।
জানা গিয়েছে, বেলপাহাড়ির বিনপুরের ২ নম্বর ব্লকের যুব সভাপতি রাজীব মাহাতকে সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের পদ থেকে সরানো হয়। দীর্ঘদিনের এই যুব সভাপতির অপসারণ নিয়ে বিনপুর ২ নম্বর ব্লক জুড়ে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল।
সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটল এবার। ব্লক স্তরের যুব সভাপতির অপসারণের প্রতিবাদে বাঁশপাহাড়ি, বেলপাহাড়ি, সন্দাপাড়া, শিলদা, ভেলাইডিয়া ও হাড়দা অঞ্চলের যুব সভাপতিরা এদিন একযোগে পদত্যাগ করলেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টি জেলার যুব সভাপতিকে জানানো হলেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা দলীয় পদ ছাড়লেন।
অপসারিত নেতার অনুগামীদের অভিযোগ, এই রাজীব মাহাতই ২০১০ সালে আরএমএস কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রার্থী ছিলেন এবং ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ব্লক যুব সভাপতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। দলের কাজ করার জন্য তিনি নিজের চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি। অথচ তাঁকে চক্রান্ত করে দল থেকে সরানো হয়েছে।
এই চক্রান্তের অভিযোগে এদিন বিনপুর এলাকার নিচুতলার প্রায় ৯০০ নেতা-কর্মী পদত্যাগ করেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, ক্ষোভের কথা জানাতে নেতা-কর্মীরা ফোন করলেও জেলা স্তরের যুব সভাপতি তা ধরেন না।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে কর্মীদের দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে জঙ্গলমহলের এই গণ-পদত্যাগ দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই প্রকাশ্যে আনল।