দুই দিন ধরে চলা সংঘর্ষে উত্তাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (CU) ক্যাম্পাস। শনিবারের ঘটনার পর রবিবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই ঘটনায় দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ফলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে আসে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রী রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন। অভিযোগ, তখন দারোয়ান তাকে ভিতরে ঢুকতে বাধা দেন এবং তাকে মারধর করেন। এরপরই মেয়েটি তার এক বন্ধুকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে কিছু ছাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দারোয়ানের সঙ্গে তাদের তর্ক শুরু হয়। পরে ছাত্ররা দারোয়ানের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনা দেখে স্থানীয়রা বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং তারাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। অবস্থা আরও খারাপ হয় যখন স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আরও লোক জড়ো করতে শুরু করেন। অন্যদিকে, খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অনেক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ও লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে। কিছু ছাত্রকে আশপাশের বাড়িতেও পাথর ছুড়তে দেখা যায়। দুই দিনের এই সংঘর্ষে দুই পক্ষ মিলে প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি এতটা ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে।
সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে কোনো পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছিল না বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। এই অনুপস্থিতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলছেন। তাদের মতে, সময়মতো পুলিশি হস্তক্ষেপ হলে পরিস্থিতি সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।