তামিলনাড়ুর বনদপ্তরের অফিসের শৌচাগার থেকে মারিমুথু নামে এক আদিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে প্রবল শোরগোল পড়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বনদপ্তরের কর্মকর্তাদের হেফাজতে থাকাকালীন তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার থেকে সিপিএমের কর্মী এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
পরিবারের অভিযোগ ও পুলিশের ভূমিকা:
মারিমুথুর স্ত্রী পান্ডিয়াম্মাল পুলিশকে জানিয়েছেন যে, গত ২৯শে জুলাই গাঁজা চাষের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলা থেকে আদালত তার স্বামীকে মুক্তি দেয়। ওই দিন মারিমুথু বাড়িতে জানিয়েছিলেন যে, তিনি আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। কিন্তু এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। ৩১শে জুলাই, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পান্ডিয়াম্মালকে জানানো হয়, তার স্বামী বনদপ্তরের অফিসের মধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন।
মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন যে, উদুমালাইপেট ফরেস্ট রেঞ্জের কর্মকর্তারা তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যান এবং বেআইনিভাবে আটকে রাখেন। তার দাবি, কর্মকর্তাদের হেফাজতে থাকাকালীনই মারিমুথুর মৃত্যু হয়েছে এবং তিনি আত্মহত্যা করেননি।
বনদপ্তরের সূত্র ও ঘটনার বিবরণ:
বনদপ্তরের একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিলুপ্তপ্রায় জন্তুর দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মারিমুথুকে আটকে রাখা হয়েছিল। জানা গেছে, সিন্নারু এলাকায় কেরালা পুলিশ একটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিল। সেই সময় একটি গাড়ি থেকে বিলুপ্তপ্রায় জন্তুর দেহাংশ উদ্ধার হয় এবং সেই সময়ই মারিমুথুকে ধরা হয়। কেরালা পুলিশ তাকে উদুমালাইপেট ফরেস্ট রেঞ্জের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে ফরেস্ট অফিসের শৌচাগার থেকে মারিমুথুর গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
বিক্ষোভ ও মামলার অগ্রগতি:
মারিমুথুর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই আদিবাসী সম্প্রদায় এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তফশিলি জাতি-উপজাতি নিপীড়ন রোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট নিথ্যাকলা ঘটনার অনুসন্ধান করছেন। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই আদিবাসী মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।