একদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি, তার উপর ডিভিসি (DVC)-র ছাড়া জলে বানভাসি দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। রাজ্যের একাধিক জেলায় রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বিজয়া দশমীর আনন্দ কার্যত মাটি হয়ে গিয়েছে। শহর কলকাতা সহ মফস্বল অঞ্চলগুলিতেও জল থই থই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের এই বিপর্যয়ের জন্য ফের ডিভিসি-কেই কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার একাদশীর দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ বার্তা পোস্ট করে রাজ্যের সর্বোচ্চ নেত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানান, এই পরিস্থিতি কোনো ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়’, এটি ‘ডিভিসি-র তৈরি করা বিপর্যয়’।
“বাংলাকে বিসর্জন হতে দেব না”: ডিভিসি-কে কড়া বার্তা
রাজ্যজুড়ে প্লাবন পরিস্থিতি নিয়ে ডিভিসি-র বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, ডিভিসি-র ‘ইচ্ছাকৃত আচরণে’ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বিপন্ন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন:
“বিজয়া দশমী মানে দুর্গাপুজোর শেষ, আনন্দ, উল্লাস এবং নতুন আশার সময়। কিন্তু ডিভিসি শান্তিপূর্ণভাবে বাংলাবাসীকে উৎসব উদযাপন করতে দিল না। কারণ, রাজ্যকে কোনও নোটিশ না দিয়েই তারা ৬৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। উৎসবের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্দশার পরিস্থিতি তৈরি করা ছাড়া এটা আর কিছুই নয়।”
ডিভিসি-র এই পদক্ষেপকে ‘লজ্জাজনক ও অগ্রহণীয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “এটা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়। এটা ডিভিসির দ্বারা তৈরি করা বিপর্যয়।”
“অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব”: কড়া হুঁশিয়ারি
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ডিভিসি-র এই আচরণে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি এই জল ছাড়ার ঘটনাকে বাংলার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসাবেই দেখছেন।
দৃঢ়ভাবে তিনি হুঁশিয়ারি দেন:
“আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমি বাংলাকে বিসর্জন দিতে দেব না। বাংলাবিরোধী যেকোনোও ষড়যন্ত্র সমস্ত শক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াব। সত্যের জয় হবে। অপশক্তির বিরুদ্ধে সত্যের জয় হবেই।”
নিম্নচাপের জেরে যখন কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় জল জমার সমস্যা তীব্র, ঠিক সেই সময়ে ডিভিসি-র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া বার্তা রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাতের পারদ আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।