নীল জলরাশি, ছোট ছোট দ্বীপ আর সবুজ পাহাড়ের মিতালি— সপ্তাহান্তের ছুটির জন্য বাঙালির অন্যতম প্রিয় ঠিকানা মাইথন। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষ লগ্নে যে চেনা ভিড়ে মাইথন গমগম করার কথা, এবার সেখানে দেখা গেল উল্টো ছবি। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো কম। কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে এল অব্যবস্থা, উচ্চহারে প্রবেশমূল্য এবং প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার এক করুণ চিত্র।
আসানসোল শিল্পাঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ ১০-১১ ডিগ্রিতে নেমেছে। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ার সঙ্গে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা চাদর মুড়ি দিয়ে থাকছে প্রকৃতি। ফলে কাকভোরে উঠে পিকনিক করতে যাওয়ার উৎসাহে জল ঢেলেছে আবহাওয়া। তবে শুধু আবহাওয়া নয়, মাইথনের শ্রীহীন দশাই পর্যটকদের বিমুখ করার মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এবার পিকনিক পার্টিদের জন্য প্রবেশমূল্য একলাফে ২৫০ টাকা করা হলেও পরিষেবার মান তলানিতে। পিকনিক স্পটজুড়ে যত্রতত্র জঞ্জালের স্তূপ। বর্ধমান থেকে আসা পর্যটক অরুন্ধতী মন্ডলের কথায়, “আগেও এসেছি কিন্তু এত জঞ্জাল দেখিনি। দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না, ডাস্টবিন নেই, তার ওপর গবাদি পশুর আনাগোনা। আনন্দটাই মাটি হয়ে গেল।”
অন্যদিকে, মাইথনের প্রধান আকর্ষণ নৌকাবিহারে দেখা গিয়েছে চরম গাফিলতি। পর্যটকদের অভিযোগ, অধিকাংশ নৌকায় পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট নেই। ফলে যেকোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। যদিও নৌকাচালকদের দাবি, পর্যটকরাই লাইফ জ্যাকেট পরতে চান না। তবে তাঁরাও মেনে নিচ্ছেন যে, আকাশছোঁয়া এন্ট্রি ফি এবং জঞ্জালময় পরিবেশের কারণে ঝাড়খণ্ড ও বাংলার পর্যটকরা এবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এখন সবার নজর পয়লা জানুয়ারির দিকে; ওইদিন ভিড় না বাড়লে মাইথনকে কেন্দ্র করে যাঁদের রুটিরুজি চলে, তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকেই যাবে।