চা-শ্রমিকদের বেতন থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ)-এর টাকা কেটে নেওয়ার পরও তা জমা না-করার গুরুতর অভিযোগ উঠল আলিপুরদুয়ারের পাটকাপাড়া চা-বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির রিজিওনাল পিএফ দফতর (EPFO) এই বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করে আলিপুরদুয়ার থানায় এফআইআর দায়ের করেছে।
বকেয়ার পরিমাণ ও পিএফ কমিশনারের বক্তব্য: জলপাইগুড়ির রিজিওনাল পিএফ কমিশনার পবন কুমার বনসাল জানিয়েছেন, পাটকাপাড়া চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের পিএফের ৩৩ লক্ষ ৪১ হাজার ২৯ টাকা জমা করেনি। বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তিনি বলেন, বকেয়া টাকার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইনি পদক্ষেপের প্রভাব: পিএফ কমিশনারের দাবি, থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই নিজেদের বাঁচাতে চা-বাগান মালিকপক্ষ বকেয়া পিএফের টাকা জমা করতে বাধ্য হচ্ছে।
-
উদ্ধার: গত পাঁচ বছরে ৩৬টি চা-বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। মোট ২৮ কোটি টাকা বকেয়া ছিল, যার মধ্যে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর ২০ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই জমা হয়েছে।
-
চলতি বছরের চিত্র: চলতি বছরে মোট আটটি চা-বাগানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসে সীতারামপুর, জুন মাসে চুনাভাটি এবং সম্প্রতি পাটকাপাড়া চা-বাগানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো।
অন্যান্য বাগানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: জলপাইগুড়ি রিজিওনাল পিএফ অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পিএফ বকেয়ার কারণে জলপাইগুড়ি জেলার পাঁচটি চা-বাগানের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। বাগানগুলি হলো— জয়পুর, সাইলি, নয়া সাইলি, সুভাষিনী ও সীতারাম চা-বাগান। এছাড়াও ৩৩টি চা-বাগানের মালিকের বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিশ জারি করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন চুনাভাট্টি চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭১ হাজার ১৮৪ টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নিলেও পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা করেনি। এছাড়াও জয়পুর চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ৭৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮৩৪ টাকা এবং সীতারামপুর প্রজেক্ট চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ১০ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৫৭ টাকা কেটেও জমা করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।