‘পাগল’ বললেও পরোয়া নেই, নিজের খরচে হাসপাতাল থেকে শ্মশান পরিষ্কার করেন! পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশান্ত চন্দ এক নীরব সেবক

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার মোগলমারী এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত চন্দ। পেশায় একজন সামান্য ব্যবসায়ী। অনেকেই তাঁকে ‘পাগল’ বলে কটাক্ষ করেন, কিন্তু সেই কটুক্তিতে তিনি যেন বিন্দুমাত্র বিচলিত নন। কারণ, শীত বা বর্ষা—যে কোনও আবহাওয়াতেই তিনি একটি সাইকেল নিয়ে ঝাঁটা আর কোদাল হাতে বেরিয়ে পড়েন, যে কাজ সাধারণত ‘সুস্থ’ মানুষেরা ভাবতে পারেন না।

তাঁর প্রতিদিনের সকালের রুটিন হল: বাজারের স্থান, স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মন্দির এমনকি শ্মশান পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন করা। তিনি কোনও সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার নিযুক্ত কর্মী নন। সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে এবং নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করেই তিনি দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে এই কাজ করে চলেছেন। বিনিময়ে তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি হলো মানসিক শান্তি।

ছিপছিপে চেহারার এই ব্যক্তি বরাবরই পরিবেশ-সচেতন। করোনার সময় তিনি রেশন দোকান ও ওষুধের দোকানের সামনে নিজের খরচে চুন দিয়ে দাগ কেটে মানুষকে সচেতন করেছিলেন। রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা এড়াতে কবিতা লিখেও তিনি মানুষকে বার্তা দিয়েছেন। প্রশান্ত বাবুর মতে, এই পাগলামিতে যদি পরিবেশ পরিষ্কার থাকে এবং ব্যস্ততম জায়গাগুলি পরিচ্ছন্ন থাকে, তবে তাঁর মানসিক শান্তি আসে।

বাড়িতে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। তবুও ভোরে ঘুম থেকে ওঠার আগেই তিনি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা শ্মশানে পৌঁছে যান। কাউকে কিছু না বলে নিজের পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন এবং কাজ শেষে বাড়ি ফিরে যান। বেশ কয়েকবার কটুক্তি শুনলেও সাধারণ মানুষের জন্য পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার এই কাজ তিনি থামাননি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy