ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং সম্প্রতি ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) নিয়ে এক বিস্ফোরক দাবি করে জানিয়েছেন, এই অভিযানে ভারতীয় সেনা পাকিস্তানের ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি গভীরে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল এবং এর ‘প্রমাণও’ রয়েছে।
আগামী ৮ অক্টোবর ‘এয়ারফোর্স ডে’-র আগে এক সাংবাদিক বৈঠকে বায়ুসেনা প্রধান এই ঐতিহাসিক সামরিক অভিযানের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি নিশ্চিত করেন, এই আক্রমণ ছিল ভারতীয় স্থল, বায়ু ও নৌসেনার তিনটি বাহিনীর সমন্বয়ের ফলাফল।
বিধ্বংসী আক্রমণের ক্ষয়ক্ষতি: কী কী ধ্বংস হয়েছে পাকিস্তানে?
পাকিস্তানের উপর হওয়া এই গভীর আক্রমণের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং বিস্তারিত তথ্য দেন। তিনি দাবি করেন, ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে:
সামরিক স্থাপনা: তাদের ৪টি রাডার, ২টি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং ৩টি ভিন্ন স্টেশনের ৩টি হ্যাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিমান ও রানওয়ে: দু’টি রানওয়ে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া, একটি C-130 শ্রেণির বিমান এবং কমপক্ষে ৪-৫টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্ভবত একটি এফ-১৬ বিমানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কারণ আক্রমণের সময় সেটি সেখানেই ছিল।
ক্ষেপণাস্ত্র: একটি ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রও (SAM) ধ্বংস করা হয়েছে।
এপি সিং জোর দিয়ে বলেন, “অপারেশন সিঁদুরের সময় আমরা ৩০০ কিমিরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে হামলা চালিয়েছি। ইতিহাস গড়েছি।”
জঙ্গি ঘাঁটি স্থান পরিবর্তনে বাধ্য: পাল্টা কৌশল তৈরি
গত ৬ মে গভীর রাতে ভারতীয় সেনা পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। এর ফলেই জঙ্গি সংগঠনগুলি তাদের মূল কার্যালয়গুলির স্থান বদলে খাইবার পাখতুনখোওয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বায়ুসেনা প্রধান বলেন, “এটা তো হওয়ার কথা ছিল… ওরা (জঙ্গিরা) তাদের জায়গা পাল্টাচ্ছে। এবার হয়তো জঙ্গিঘাঁটিগুলির আকার বড় না হয়ে ছোট হবে।”
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারতীয় বায়ুসেনা এখন আরও গভীরে গিয়ে ‘অভ্রান্ত নিশানায়’ হামলা চালাতে সক্ষম। তিনি বলেন, “আমরা ওদের এবং ওদের লুকনোর জায়গাগুলি ধ্বংস করে দেব।”
এছাড়াও, বায়ুসেনা প্রধান রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের (ADS) ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা পাকিস্তানের একাধিক ড্রোন ও মিসাইল রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে তিনি ২০৪৭ সালকে মাথায় রেখে ভারতীয় বায়ুসেনার ক্ষমতা প্রসারণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার কথাও জানান।