জলপাইগুড়িতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। ২০২০ সালের বিভীষিকাময় সেই গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অবশেষে সুবিচার পেল জলপাইগুড়ির নির্যাতিতা নাবালিকা। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালত এই লোমহর্ষক ঘটনায় জড়িত তিন দোষীকে ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিল। এই রায় ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত নাবালিকার পরিবার। “অভিযুক্তদের সাজা হওয়ায় আমরা খুশি,” জানিয়েছেন নাবালিকার বাবা।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের ১০ই আগস্ট, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুবাড়ি গ্রামে। দশমীর প্রাক্কালে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। পরবর্তীতে ২১শে আগস্ট পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে। জানা যায়, ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই নাবালিকাকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রায় দশ দিন ধরে তাকে আটকে রেখে লাগাতার ধর্ষণ করে তিন অভিযুক্ত। এমনকি, নৃশংসভাবে প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মৃতদেহ একটি সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে ঢুকিয়ে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। রাজগঞ্জ থানার পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে একজনকে এবং পরে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা জেল হেফাজতেই ছিল।
সহকারী সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত সাংবাদিকদের জানান, “ধৃতরা নাবালিকাকে লাগাতার ধর্ষণ করে। হোটেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এরপর নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “বিচারক ধৃতদের ফাঁসি এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় আদালতে। এটি জেলা আদালতের একটি বিরল ঘটনা।”
এদিকে, আরজি কর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ফের প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আগামী ৮ই আগস্ট রাতভর প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়। গত বছর ৮ই আগস্ট রাতে আরজি করে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছিল, যা রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেই ঘটনার বিচার চেয়েই আবারও পথে নামছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।