আরব সাগরে মৌসুমোত্তর প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ (Cyclone Shakhti) ক্রমশ আরও শক্তিশালী হয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, শক্তি বর্তমানে একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে (Severe Cyclonic Storm) পরিণত হয়েছে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এটি গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় জেলাগুলিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিমধ্যেই দুই রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল (NDRF ও SDRF) মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের বর্তমান অবস্থান ও গতিপথ
শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাওয়া IMD-র তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ বর্তমানে আরব সাগরের উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থান করছে। এর অবস্থান হলো:
গুজরাট: দ্বারকা থেকে প্রায় ৪২০ কিমি পশ্চিমে এবং নালিয়া থেকে ৪৭০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে।
পাকিস্তান: করাচি থেকে প্রায় ৪২০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে।
ওমান: মাসিরাহ দ্বীপ থেকে প্রায় ৬০০ কিমি পূর্ব-উত্তরপূর্বে।
গত ছয় ঘণ্টায় এটি ঘণ্টায় প্রায় ১৮ কিমি বেগে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, ৫ অক্টোবর পর্যন্ত শক্তি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। তবে ৬ অক্টোবর সকাল থেকে এটি পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে ঘুরে দুর্বল হতে শুরু করবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও প্রভাব
ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে পৌঁছানোর আগেই দুর্বল হতে শুরু করলেও, উপকূলবর্তী অঞ্চলে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে:
বৃষ্টিপাত: আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের উপকূলীয় জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ঝোড়ো হাওয়া: উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সমুদ্রের পরিস্থিতি: সমুদ্র অত্যন্ত উত্তাল থাকবে এবং ঢেউয়ের উচ্চতা বাড়বে।
প্রশাসন ও মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা
মহারাষ্ট্র ও গুজরাট সরকার ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে উপকূলবর্তী গ্রামের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করে IMD জানিয়েছে, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম আরব সাগর, মধ্য আরব সাগর এবং গুজরাট ও উত্তর মহারাষ্ট্র উপকূল সংলগ্ন এলাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়গুলির মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ‘তাউকতে’ (২০২১) ও ‘বিপর্জয়’ (২০২৩)-এর মতো শক্তিশালী ঝড় পশ্চিম উপকূলে গুরুতর প্রভাব ফেলেছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘Shakhti’ প্রস্তাব করেছে শ্রীলঙ্কা।