দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ড, মেডিক্যাল রিপোর্টে ‘গভীর ক্ষত’ ও রক্তপাতের প্রমাণ! ধৃতদের মধ্যে তৃণমূলের ‘ক্যাডার’, বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর

দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীর উপর নৃশংস গণধর্ষণ মামলায় এবার তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) যোগসূত্র নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করেন, এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে শাসকদলের ‘ক্যাডার’ এবং পদাধিকারী জড়িত।

এদিকে, পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি সামনে এসেছে নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্ট। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতচিহ্ন এবং প্রবল রক্তপাতের প্রমাণ মিলেছে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মানসিক ট্রমা কাটাতে সময় লাগবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

ধৃতদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ?
গণধর্ষণ মামলায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যদিও মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা। তবে রবিবার সন্ধ্যায় যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাকে নিয়েই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখনও পর্যন্ত ৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। শেষ যিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, তিনি দুর্গাপুর পুরনিগমের অস্থায়ী কর্মী। তিনি তৃণমূলের ক্যাডার। তাঁর বাবা পার্টির পোর্টফোলিও হোল্ডার।”

শুভেন্দুর দাবি, “এই গণধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারী জড়িত। শাসক যখন শোষকে পরিণত হয়, তখন আইনের শাসন ও বিচার পাওয়ার অধিকার শেষ হয়ে যায়।” তিনি জানান, তিনি তিনজনের নাম ও পরিচয় সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনও একজন অধরা। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, পুলিশ মূল অপরাধীকে আড়াল করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।

সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ:
তদন্তে নির্যাতিতার সহপাঠীর ভূমিকা নিয়েও বেশ কিছু অসঙ্গতি উঠে এসেছে। নির্যাতিতার বাবাও ওই সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জানা গেছে, অভিযুক্তরা যখন নির্যাতিতাকে জঙ্গলের মধ্যে ঘিরে ধরে, তখন সহপাঠী কিছুক্ষণ সেখানে থেকে চলে যান। পরে প্রায় আধঘণ্টা পর তিনি ফের ফিরে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেন।

পুলিশ ওই সহপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কেন তিনি ঘটনার সময় এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং কেনই বা আধঘণ্টা পর ফিরে এসেছিলেন— এই সব ‘মিসিং লিঙ্ক’ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের বয়ানেও ফাঁকফোকর রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সব মিলিয়ে, মেডিক্যাল রিপোর্টের ভয়াবহ তথ্য এবং শাসকদলের সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগ থাকার অভিযোগ— এই দুই কারণে দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ড ঘিরে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy