একদিকে অভিজাতদের বাস, অন্যদিকে IT হাবের কর্মক্ষেত্র—কলকাতার উপকণ্ঠে থাকা সল্টলেক, নিউটাউন, সেক্টর ফাইভের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর বহু অংশই সন্ধ্যার পর শুনশান ও নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এই অঞ্চলে কর্মরত বহু মানুষের অভিযোগ, সূর্য ডুবলে নিরাপত্তাহীনতা যেন পদে পদে গ্রাস করে, যা নারী নিরাপত্তা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলে দেয়। দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১৪টি থানার ফোন নম্বরই অচল:
সমস্যা আরও বাড়িয়েছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত থানাগুলির অচল ফোন নম্বর। সোমবার সন্ধে পর্যন্ত দেখা গেছে, বিধাননগর কমিশনারেটের ওয়েবসাইটে দেওয়া ১৫টি থানার মধ্যে ১৪টি থানার ল্যান্ডলাইন নম্বরে ফোন করলেই শোনা গেছে ‘ইনভ্যালিড’ (Invalid) উত্তর। এবিপি আনন্দ যখন ফোন নম্বরগুলি যাচাই করতে শুরু করে, তখনও একই অবস্থা দেখা যায়। এমনকি নারায়ণপুর থানার নম্বরে ফোন করলে অন্য কেউ ফোন ধরে জানান— ‘রং নাম্বার’। অর্থাৎ, এই এলাকায় কেউ বিপদে পড়লে এক ফোনেই পুলিশকে খবর দেওয়া কার্যত অসম্ভব ছিল।
বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন ডেপুটি কমিশনার:
বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার অনীশ সরকার কার্যত এই সমস্যা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা চেক করেছি, অনেক সময় ল্যান্ডলাইন খারাপ হয়, সেটা ঠিক করা হয়। কিন্তু এখন যে নম্বরগুলো ব্যবহার করা হয়, সেটা দিয়ে দেব। থানার আইসি বা ডিউটি অফিসারের কাছে যে নম্বর থাকে, সেটা স্টেবল কন্ডিশনে আছে।”
তিনি আরও জানান, কিছু কিছু থানায় সেপারেট উইমেন হেল্প লাইন নম্বর আছে, যেমন সেক্টর ফাইভ থানাতেই আছে। তিনি বলেন, “আমরা দেখে নিচ্ছি আপডেট করে নেব।”
খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসল পুলিশ:
ডেপুটি কমিশনারের প্রতিক্রিয়ার পরও প্রশ্ন উঠেছে— সাধারণ মানুষের ক’জনের কাছে থানার কর্তাদের ব্যক্তিগত নম্বর থাকে? বিপদের সময় সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে থানার ফোন নম্বর জোগাড় করার অবস্থায় ক’জন থাকেন? তবে, এবিপি আনন্দের এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। সোমবার সন্ধে ৭টার পর দেখা যায়, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ওয়েবসাইটে ১৫টি থানার নতুন ফোন নম্বর দ্রুত আপডেট করে দেওয়া হয়েছে।