শারম-আল-শেখ (মিশর): ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আজ (১৩ অক্টোবর) মিশরের শারম-আল-শেখে একটি গুরুত্বপূর্ণ শান্তি চুক্তি হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহ প্রায় ২০টি দেশের নেতারা এই বৈঠকে অংশ নেবেন। ভারতের পক্ষ থেকে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং উপস্থিত থাকবেন।
পণবন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু:
হামাসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ২০ জন ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যাদের রেড ক্রসের দল ইজরায়েলে নিয়ে গেছে। এর বিনিময়ে এবার ইজরায়েল হামাসের ২০০০ জন প্যালেস্তানীয় বন্দিকে মুক্তি দেবে। এই বন্দিদের ট্রাকে করে গাজার নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
তবে ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাসের হামলায় ২৫০ জন পণবন্দি হয়েছিল। সেই সময় ইজরায়েলে প্রাণ গিয়েছিল ১২৫০ জনের বেশি নাগরিকের। বর্তমানে গাজায় হামাসের হাতে এখনও ২৮ জন পণবন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের বেঁচে থাকার আশা করা হচ্ছে।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইজরায়েল তার বেশিরভাগ পণবন্দিকে জীবিত ফেরত পেতে পারত, কিন্তু “তাদের নীতির কারণে” অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই।
গাজার ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি:
গত দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের ভয়াবহতা উঠে এসেছে বিভিন্ন রিপোর্টে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৭,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং ১.৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
ধ্বংসস্তূপ: ইজরায়েলি সেনা গাজার ৭৫ শতাংশেরও বেশি বিল্ডিংকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় প্রায় ৫.৪০ কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে, যা পরিষ্কার করতে ১০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে।
অর্থনৈতিক ক্ষতি: রাষ্ট্রসঙ্ঘের (UN) রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে প্রায় ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: গাজার ৯০%-এরও বেশি হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে গেছে।
গৃহহীনতা ও দুর্ভিক্ষ: গাজার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ, যার মধ্যে ১৯ লক্ষ মানুষ সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার।
এই ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় আজকের শান্তি বৈঠক গাজায় স্থায়ী শান্তির বার্তা নিয়ে আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।