দীপাবলির আগেই সাফল্যের আলো! সুগন্ধি মোমবাতির ব্যবসা করে আত্মনির্ভর হলদিয়ার সুনন্দা

কালীপুজোর আর ক’দিন বাকি। আলোর উৎসব দীপাবলির ঠিক আগে বাজারে এখন তুঙ্গে সুগন্ধি মোমবাতি বা ‘সেন্টেড ক্যান্ডেল’-এর চাহিদা। শুধু আলো নয়, এবার ঘর ভরে উঠবে মনভোলানো সুগন্ধে। আর সেই বিপুল চাহিদাকেই পুঁজি করে নিজের জীবনে সাফল্যের আলো জ্বালিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া কাষ্ঠখালি এলাকার বাসিন্দা সুনন্দা মণ্ডল দাস।

একসময় নিছক শখে নিজের ঘর সাজাতে মোমবাতি তৈরি করতেন সুনন্দা। সেই ভালোবাসা ও সামান্য শখের কাজই আজ এক সফল উদ্যোগে পরিণত হয়েছে। প্রথম দিকে আত্মীয়স্বজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বর্তমানে তাঁর তৈরি মোমবাতির চাহিদা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে ওড়িশা, বিহার ও ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন আসছে নতুন নতুন অর্ডারের চাপ।

দীপাবলি আসন্ন হওয়ায় কাজের চাপ বেড়েছে বহুগুণ। সুনন্দা ও তাঁর সহযোগীরা বর্তমানে দিনরাত এক করে কাজ করছেন। ল্যাভেন্ডার, রোজ, ভ্যানিলা, স্যান্ডালউড, লেমন—বিভিন্ন রঙ, আকার ও মনমাতানো ঘ্রাণের মোমবাতি তৈরি হচ্ছে তাঁর ওয়ার্কশপে।

একজন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা হয়েও এই উদ্যোগ সফলভাবে সামলাচ্ছেন সুনন্দা। তিনি জানান, “শখ থেকেই শুরু করেছিলাম, কিন্তু আজ এটা আমার উপার্জনের প্রধান মাধ্যম হয়েছে। ঘরে বসেই কাজ করি বলে পরিবারকেও পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল, এখন দু-একজন মহিলা আমার কাছ থেকে কাজ শিখেছেন এবং তাঁরাও ছোট আকারে ব্যবসা শুরু করেছেন।”

পরিবেশবান্ধব উপকরণে মোমবাতি তৈরি করা তাঁর উদ্যোগের মূলমন্ত্র। শুধুমাত্র দীপাবলিই নয়, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী বা অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্যও গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী বিশেষ ক্যান্ডেল তৈরি করে দেন তিনি।

সুনন্দা মণ্ডল দাসের এই উদ্যোগ ঘরে বসে স্বনির্ভর হতে চাওয়া বহু মহিলার কাছেই এক উজ্জ্বল প্রেরণা। তাঁর সাফল্য প্রমাণ করে, সঠিক ইচ্ছে ও পরিশ্রম থাকলে খুব অল্প পুঁজিতেও ঘরে বসে নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভর হওয়া সম্ভব। আসছে দীপাবলির উৎসবে যখন চারিদিক আলোয় আলোকিত হবে, তখন সেই আলোর সঙ্গেই ছড়াবে সুনন্দার তৈরি মোমবাতির মৃদু মিষ্টি গন্ধ, যা তাঁর পরিশ্রমের সুবাস।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy