বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এল এক ভয়ঙ্কর চিত্র। দশমীর পেট-পূজার আড়ালে ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) একাধিক রেস্তোরাঁ ও হোটেল জনসাধারণের স্বাস্থ্য নিয়ে চরম ছিনিমিনি খেলছিল বলে অভিযোগ। খাদ্য সুরক্ষা দফতর, পুলিশ, দমকল এবং পুরসভার যৌথ অভিযানে শহরের একাধিক নামী রেস্তোরাঁর ফ্রিজ খুলতেই বেরিয়ে এল পচা মাংস, বাসি খাবার ও নিষিদ্ধ কেমিক্যালের স্তূপ। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় জনমহলে।
পুজোর দিনগুলিতে খাবারের বিপুল চাহিদার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী শুধুমাত্র মুনাফার লোভে মানুষের স্বাস্থ্যকে চরম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দশমীর দুপুর গড়াতেই ১১৭ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ডায়মন্ড হারবার শহরের একাধিক রেস্তোরাঁ ও হোটেলে হানা দেয় বিশেষ যৌথ বাহিনী। প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য ছিল যে, একাধিক হোটেলে পুরনো, বাসি এবং পচা খাবার মজুত করা হচ্ছে, যা গরম মসলা দিয়ে নতুন করে রান্না করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছিল।
ফ্রিজে পচা মাংসের স্তূপ, রান্নাঘরে নিষিদ্ধ কেমিক্যাল
যৌথ দল রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে প্রবেশ করতেই চমকে ওঠেন আধিকারিকরা। পরিদর্শনের সময় ফ্রিজ খুলতেই বেরিয়ে আসে হাড় হিম করা দৃশ্য। বিপুল পরিমাণে বাসি ভাত, তরকারি এবং পচে যাওয়া মাংসের স্তূপ মজুত করা ছিল, যা পুনরায় গরম করে ক্রেতাদের প্লেটে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। চাহিদা মেটাতে ও খরচ কমাতে এই অস্বাস্থ্যকর (Unnhygenic Food in Durga Puja) উপাদানগুলোকেই খাদ্য হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছিল।
ফুড সেফটি দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শুধু বাসি খাবারই নয়, বাসি মাংসকে নতুন রূপ দিতে বেশ কিছু রেস্তোরাঁয় নিষিদ্ধ কেমিক্যালও ব্যবহার করা হচ্ছিল, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এই অভিযানে অবৈধভাবে মজুত করা বেশ কিছু বেআইনি গ্যাস সিলিন্ডারও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
খাদ্য সুরক্ষার এই মারাত্মক লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের উৎসবের আমেজকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করা হচ্ছিল, তার বিরুদ্ধে এই অভিযান জারি থাকবে বলেও স্পষ্ট জানানো হয়েছে। পুজোর এই বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের নিয়ে রেস্তোরাঁয় ভোজন সারতে গিয়ে এভাবে ‘বিষ-খাবার’ পরিবেশনের ঘটনায় রেস্তোরাঁ মালিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।